
জুলাই-আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপির উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে এক বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সদর মেট্রো থানার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিট থেকে আগত বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পুরো অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দলীয় ব্যানার , শহীদদের ছবি এবং ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো র্যালিপথ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিস এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম টুটুল।
বক্তারা বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, যেখানে ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। শহীদদের আত্মত্যাগ ছিল নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার এক অনুপ্রেরণামূলক মাইলফলক।
সভাপতি অ্যাডভোকেট এলিস বলেন, এই আন্দোলনের শহীদরা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে গণতন্ত্রের আলো ফিরিয়ে এনেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে রাজপথে সংগ্রাম করেছি। রক্ত দিয়েছি, জেল খেটেছি, কিন্তু থামিনি। শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট দেশবাসী একটি স্বৈরাচারমুক্ত নতুন সকাল দেখেছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ছিল সেই ঐতিহাসিক দিন, যেদিন জনগণের অদম্য প্রতিরোধে স্বৈরাচার সরকার দেশত্যাগে বাধ্য হয়। এটি ছিল শুধুমাত্র একটি দলের নয়—গণমানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই। এ বিজয়ের সুফল ধরে রাখতে হলে আমাদের সবাইকে আরো ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন থাকতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বিগত ১৭ বছরে দেশে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না, হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হয়েছিল। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে মানবাধিকার হরণ করেছিল তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী।
আলোচনা সভায় শহীদদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয় এবং সবাইকে আহ্বান জানানো হয়-এই আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়, সে জন্য গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে প্রতিটি নাগরিককে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে।
বক্তারা, অনুষ্ঠান শেষে দেশপ্রেম, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এক যুগে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
আজকালের খবর/বিএস