
নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলা একটি হাওয়ার বেষ্টিত উপজেলা। যেখানে ছয় মাস থাকে পানি আর ৬ মাস চলে শুকনো মৌসুম। যেখানে জনজীবনের দুর্ভোগের শেষ নেই, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। এখানকার মানুষ বর্ষাকালে মাছ ধরেন আর হেমন্তকালে বোরো ধান চাষ করেন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার অবস্থা খুবই দুর্বল। ১৯০৫ সালে খালিয়াজুরী থানাটি স্থাপিত হওয়ার প্রায় ১২০ বছর পর, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপিত হলেও তার কোন কার্যক্রম চালু হয়নি। তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। অফিস তথ্যমতে ২০ জন কর্মকর্তা/ কর্মচারীসহ নানা কাজে জনবল নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে কাউকেই দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ স্বাধীন, খালিয়াজুরী জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এবং খালিয়াজুরী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান কেষ্টু যৌথভাবে বলেন, আমরা স্টেশনটি চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। ষ্টেশনটি চালু হলে অত্র এলাকার জনসাধারণ উপকৃত হবে।
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ফায়ার স্টেশনে যাওয়ার রাস্তার সমস্যা ছিল, আমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাস্তাটি করে দিয়েছি আশা করি খুব তাড়াতাড়ি স্টেশনটি চালু হবে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, স্টেশনে কিছু সমস্যা ছিল সমাধান করা হয়েছে, আমি ফায়ার সার্ভিস অফিসকে বলেছি তাড়াতাড়ি স্টেশনটি চালু করার জন্য, আশা করি খুব দ্রুত চালু হবে।
নেত্রকোনা জেলার উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি ৩০৬৫২৮৩৭ টাকা ব্যয়ে বিগত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কাজ শুরু হয়ে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শেষ হলে ০৯ টি পদে ২০ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। স্টেশন অফিসার একজন, সাব অফিসার একজন, লিডার দুইজন, স্পিড বোট ড্রাইভার একজন,সাধারন ড্রাইভার দুইজন, ফায়ার ফাইটার ১০ জন, ডুবুরী তিনজন, সরকারি বাবুর্চি একজন ও ঝাড়ুদার একজন সহ মোট ২০ জন কর্মকর্তা /কর্মচারী উক্ত ষ্টেশনে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে, বিভিন্ন স্টেশনে কর্মরত আছে। প্রয়োজনীয় মালামাল ও যন্ত্রপাতি মজুদ আছে, কিন্তু সামান্য কিছু রাস্তার কাজের বাকি থাকায় ঠিকাদারের নিকট থেকে স্টেশন বুঝে নেওয়া হয়নি।
ময়মনসিংহের বিভাগীয় উপপরিচালক (অফিসার) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, মেইন রোড থেকে স্টেশন পর্যন্ত একটি রাস্তার সমস্যা ছিল। রাস্তাটি করা হয়েছে, কিন্তু রাস্তাটির কোন দেয়াল ও পাকা করার ব্যবস্থা না থাকার কারণে স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না, আশা করি রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরন করে চালু করা হবে।
স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের দায়সারা মতামত, কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্টেশনে যাওয়ার কেন রাস্তা হয় নাই? এ দায়ভার কার? কর্তৃপক্ষের, না জনতার?
আজকালের খবর/বিএস