জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হয় ‘পয়েট অব পলিটিকস’ বা ‘রাজনীতির কবি’। তার যাদুকরি কণ্ঠে মুগ্ধ হয়েছে দেশের আপামর মানুষ। তিনি দেশের মানুষের অন্তরের ভাষা, মনের গহীনে জমে থাকা ব্যাথা বেদনা, জ¦ালা, দুঃখ, ক্ষোভ বুঝতেন, বুঝতেন তাদের চাওয়া-পাওয়া কী, তাদের অভাব, অভিযোগ কী? দেশের আপামর মানুষের চাওয়া-পাওয়া, না পাওয়ার বেদনার নিরসনকল্পে জীবনভর রাজনীতি করেছেন। আর এ কারণেই মানুষও তাকে নিজেদের উজাড় করে সর্বস্ব দিয়ে ভালোবেসেছেন, বিশ^াস করেছেন, তার ওপর আস্থা রেখেছেন, তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তাই বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিটি আন্দোলনে সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে দেশের প্রতিটি মানুষ অংশ নিয়েছেন, জেল খেটেছেন, পশ্চিমা শাসক, শোষক গোষ্ঠির নির্যাতিন, নিপীড়ন সয়েছেন অকাতরে, নিঃদ্বিধায় জীবনও দিয়েছেন।
এর প্রমাণ ৫২’র মহান ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফা তথা বাঙালীর মুক্তি সনদ, ৬৯’র গণআন্দোলন, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ, পরিশেষে ত্রিশ লাখ শহীদ, দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম, অজুত-নিজুত পরিমাণ সম্পদহানির বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতা উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন, তার রাজনীতিকে অভিষ্ট লক্ষ্যে, বিজয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে দেশের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, পালাকার, লোককবি, গায়েন, গল্পকার মনের মাধুরি মিশিয়ে রচনা করেছেন কবিতা, গান, গল্প, পালাগান, জারি, সারি, ছড়া। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে শেষ এমনকি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে স্ব-পরিবারে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ড কিংবা এখন অব্দি তাকে নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য সাহিত্যকর্ম। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত শিল্প-সাহিত্য রচিত হয়েছে বিশে^র আর কোনো রাজনৈতিক নেতাকে নিয়ে এমন শিল্প সাহিত্য রচনার নজির নেই। এসব সাহিত্যকর্মে রয়েছে আন্দোলন-সংগ্রামে এগিয়ে যাওয়ার অপরিসীম অনুপ্রেরণা, উদ্দীপনা, শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার শাণিত উচ্চারণ। এর ফলে আমাদের প্রতিবাদের-প্রতিরোধের লড়াইতে সামিল হওয়ার সাহস, শক্তি, অনুপ্রেরণা যোগাতে সহায়ক হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের শিল্প-সাহিত্য, বাঙালির হাজার বছরের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হয়েছে। একইভাবে যে কোনো অন্যায়, অনাচার, অপশাসন, দুঃশাসন, অবিচারের বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতিবাদী হতে সাহস যোগাবে অনাগত দিনেও। তাই সময়ের প্রয়োজনে, প্রেক্ষাপটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত কিংবা তাকে নিবেদিত কবিতা, গান, ছড়া নিয়ে আলোচনা প্রাসঙ্গিক।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মাটি, আলো, বাতাস, নদীর সাথে মিশে আছেন। বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, সংগ্রাম, ত্যাগ তাকে ইতিহাসের পাতায় অমর করে রেখেছেন। তার সংগ্রামী চেতনা রাজনৈতিক অঙ্গনে যে গভীর প্রভাব ফেলেছে, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে; তেমনি তা সাহিত্য অঙ্গনে প্রভাব ফেলেছে। সমসাময়িক সাহিত্যিকদের লেখায় বঙ্গবন্ধু উঠে এসেছেন নানাভাবে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, জাপান, রাশিয়া, জার্মানি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কবি-সাহিত্যিকরা তাদের লেখায় বঙ্গবন্ধুকে ফুটিয়ে তুলেছেন নিপুণ ভাবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে গান তৈরির প্রয়াস শুরু হয় তার রাজনৈতিক পথপরিক্রমার শুরু থেকেই। তবে তা অধিকতর বেগবান হয় ৬৯’র গণআন্দোলন ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ, পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ঘাতকের নির্মম বুলেটে স্ব-পরিবারে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড নিয়ে। সেই সময়ে ‘স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশের পরিত্রাতা কে?/ সাড়ে সাত কোটি বাঙালির আজ ভাগ্য বিধাতা কে?/একটি সুরেতে কে দিয়েছে বেঁধে বাঙালির অন্তর?/সেতো শেখ মুজিবুর! ধন্য হে মুজিবুর।’ শিরোনামে গান লিখেছেন ওপার বাংলার বিখ্যাত কবি, ছড়াকার, গীতিকার লক্ষ্মীকান্ত রায়। গীতিকার হাসান মতিউর রহমানের ১৯৯০ সালে লিখেন বিখ্যাত গান ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই/যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই/তবে বিশ^ পেত এক মহান নেতা, আমরা ফিরে পেতাম জাতির পিতা...।’ গানটিতে সুর করেন সুরকার মলয় কুমার গাঙ্গুলী। প্রথমে তিনি গানটিতে কণ্ঠও দিয়েছিলেন,পরবর্তীতে গানটিতে কণ্ঠ দেন শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। সুরকার মলয় কুমার গাঙ্গুলীর সুরে শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন যেভাবে আবেগ দিয়ে দরদ দিয়ে এ গানটি গেয়েছেন, অন্য কোনো গানে এমন দরদ, আবেগ আছে বলে মনে হয়নি। বছরের নানা সময় বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরে বন্দরের অলিগলি-রাজপথ কিংবা মানুষের বাসাবাড়িতে বাজে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ শিরোনামে গান লিখেছেন গীতিকার নাসিমা বেগম, সুরকার অশোক পালের সুরে কণ্ঠ দিয়েছেন সুমন রাহাত, সালমা জাহান, শঙ্কর কুমার পাওল, সুস্মিতা সেন, বাবুল রেজা এবং শাহীনা আক্তার পাপিয়া। হুমায়ূন কবিরের কথায় মইনুল ইসলাম খানের সুরে বিখ্যাত গান ‘বঙ্গবন্ধু তুমি আমার সোনার বাংলাদেশ’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী এস আই টুটুল। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে গাওয়া ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে’ গানটি লিখেছেন মো. আবিদুর রহমান, গানটিতে সুর করেন সুধীনদাস গুপ্ত। ১৯৭১ সালে অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘শোন একটি মুজিবুরের থেকে লক্ষ মুজিবুরের কণ্ঠ ধ্বনি, প্রতিধ্বনি’ গানটি লিখেছিলেন গৌরী প্রসন্ন মজুমদার। তখন গানটিতে সুর ও কণ্ঠ দিয়েছিলেন অংশুমান রায়। গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের আরো একটি জনপ্রিয় গান ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ’। এই গানটি সুর করেছেন শ্যামল মিত্র এবং কণ্ঠ দিয়েছেন সুরকার স্বয়ং নজেই। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে ‘সেদিন আকাশে শ্রাবণের মেঘ ছিল’ গানটি লিখেছেন অধ্যাপক আবু সাঈদ। গানটিতে সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন সাদি মোহাম্মদ। জাহিদুল হকের কথায় সত্য সাহার সুরে ‘তুমি চলে গেছো থেকে যাবে তবু নাম শেখ মুজিবুর রহমান...।’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন শাম্মী আক্তার।
শিল্পী রবি চৌধুরী লেখা ‘বাংলার শিরোনাম’ কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির কথা লিখেছেন শুক্লা পঞ্চমী এবং সুর করেছেন মুরাদ নূর। সুজন হাজং-এর কথায় এবং সুমন কল্যাণের সুরে ‘পিতার রক্তে রঞ্জিত’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ফাহমিদা নবী। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘শোকের গান’ গেয়েছেন শিল্পী শফিক তুহিন। গানটি লিখেছেন শফিক তুহিন ও আবু সায়েম চৌধুরী। সুর করেছেন কবি নিজেই। দূরবীন ব্যান্ডের গায়ক মোহাম্মদ শহীদ ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিক’ শিরোনামের গান। গানটির কথা ফয়সাল রাব্বিকীন এবং সুর করেছেন রেজোয়ান শেখ। ফিডব্যাক ব্যান্ডের লুমিন গেয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামের গান। গানটির কথা দেওয়ান লালন আহমেদ এবং সুর করেন সাজেদ ফাতেমী। অনুরূপ গান লেখা, সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন এসডি রুবেল তার ‘বঙ্গবন্ধু তুমি শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ গানে। ‘ও মুজিব তুমি মিশে আছো’ গানটির লেখা, সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন সুভাস দাশ নিজেই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা গানে কণ্ঠ দিলেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। ‘বঙ্গবন্ধু তুমি স্বপ্ন বাঙালির/হাজার বছর ধরে/ বঙ্গবন্ধু তুমি ভোরের সূর্য উঠুক পৃথিবী জুড়ে’ গানটি লিখেন সুজন হাজং। যাদু রিছিলের সুরে এর সঙ্গীতায়োজন করেছেন মুশফিক লিটু। কবি সুজন হাজং-এর লেখা এবং সুরকার যাদু রিছিলের সুর করা আরো একটি গান ‘এখন কেমন আছে বঙ্গবন্ধুর বত্রিশ নম্বর বাড়িটি/এখন কোথায় আছে বঙ্গবন্ধুর কালো ফ্রেমের চশমাটি/ এখন কোথায় আছে বঙ্গবন্ধুর সেই ইজি চেয়ারটি/এখন কোথায় আছে শেখ রাসেলের সেই ছবিটি’ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দী।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসংখ্য গান রচনা করেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অশোক পালের কণ্ঠে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’, আবুল লায়েসের কণ্ঠে ‘তিনি কি আসবেন?’, শেখ ফরিদের কণ্ঠে ‘সাত কোটি মানুষের মুক্তির জন্য’, দিলীপ রায়ের কণ্ঠে ‘বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা দিয়েছো বাঙালির’, বেগম মমতাজ হোসেনের কণ্ঠে ‘মধুমতী নদীর তীরে টুঙ্গীপাড়া গ্রাম’, ওমর ফারুকের কণ্ঠে ‘আমার বঙ্গবন্ধুর নৌকায় চড়ে’, সায়েফ আলীর কণ্ঠে ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এসো’, সুভাষ দত্তের কণ্ঠে ‘ও মুজিব তুমি মিশে আছ’, রোজিনার কণ্ঠে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়’, বর্ষার কণ্ঠে ‘বঙ্গবন্ধু হে মহান নেতা’, মতিয়ার রহমানের কণ্ঠে ‘তুমিই বাংলাদেশ, সেই ১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের খোকা, দশরত্ন’, ‘শুভ জন্মদিন জাতির পিতা তোমার শুভ জন্মদিন’ প্রভৃতি গীত ও পরিবেশিত হয়।
আবার শব্দে ও ছন্দে বঙ্গবন্ধু এসেছেন বারবার। কবিতায় ব্যক্তি মুজিবের আদর্শ, তার প্রয়াণ, তার ত্যাগের প্রতিফলনের পাশাপাশি কোন কোন কবিতা সময়কে অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধুকে করেছে কালোত্তীর্ণ, কালজয়ী, যুগান্তরের সীমানা ছাড়িয়ে তাকে নিয়ে যাবে মহাকালের বাতিঘরে। দেশের খ্যাতিমান প্রায় সব কবিই রচনা করেছেন বেশকিছু কবিতা। কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বিখ্যাত কবিতা। তা ছাড়া ১৯৬৯ সালে ‘হুলিয়া’, ‘সুবর্ণ গোলাপের জন্য’, ‘শেখ মুজিব ১৯৭১’, ‘সেই খুনের গল্প ১৯৭৫’, ‘আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি’, ‘মুজিব মানে মুক্তি’, ‘শেষ দেখা’, ‘সেই রাত্রির কল্পকাহিনী’, ‘শোকগাথা’, ‘পুনশ্চ মুজিবকথা’, ‘আগস্ট শোকের মাস’, ‘কাঁদো বাঙ্গালী, ‘প্রত্যাবর্তনের আনন্দ’, ‘ভয় নেই’, ‘রাজদণ্ড’ প্রভৃতি কবিতা রচিত হয়েছে। অন্নদাশংকর রায়ের কবিতা ‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা/গৌরি যমুনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার/শেখ মুজিবুর রহমান’ আমাদের জীবনের, সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ তার ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে চিত্রিত করেছেন এভাবে ‘আমি কবি এবং কবিতার কথা বলছি/সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান কবিতা/সুপুরুষ ভালবাসার সুকণ্ঠ-সংগীত কবিতা/জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি মুক্ত শব্দ কবিতা/রক্তজবার মতো প্রতিরোধের উচ্চারণ কবিতা/আমরা কী তার মতো কবিতার কথা বলতে পারব?/আমরা কী তার মতো স্বাধীনতার কথা বলতে পারব? ‘আমার পরিচয়’ কবিতা সৈয়দ শামসুল হক লিখেছেন..., ‘এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ/আমি কি তেমন সন্তান?/যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান?’ শামসুর রাহমান ‘ধন্য সেই পুরুষ’ কবিতায় লিখেছেন-‘ধন্য সেই পুরুষ, যার নামের ওপর পতাকার মতো/দুলতে থাকে।’ সুফিয়া কামালের ‘ডাকিছে তোমারে’, সানাউল হকের ‘লোকান্তর তিনি আত্মদানে’, আবুল হোসেনের ‘শিকারের কবিতা’, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর ‘স্বীকারের কবিতা’, শামসুর রহমানের ‘যাঁর মাথায় ইতিহাসের জ্যোতির্বলয়’, হাসান হাফিজুর রহমানের ‘বীর নেই আছে শহীদ’, কায়সুল হকের ‘সমষ্টির স্বপ্নের নির্মাতা’, সৈয়দ শামসুল হকের ‘পিতা তোমার কথা এখন এখানে আর’, দিলওয়ারের ‘বিতর্কিত এই গ্রহে’, বেলাল চৌধুরীর ‘রক্তমাখা চরমপত্র’, মহাদেব সাহার ‘আমি কী বলতে পেরেছিলাম’, হেলাল হাফিজের ‘নাম ভূমিকায়’, শিহাব সরকারের ‘পিতা’, অসীম সাহার ‘প্রতিশোধ’, শিকদার আমিনুল হকের ‘আত্মজের প্রতি’, আসাদ চৌধুরীর ‘দিয়েছিলো অসীম আকাশ’, আবু কায়সারের ‘সূর্যের অনল’, শান্তিময় বিশ্বাসের ‘ঝড় আর মেঘের সমান’, আখতার হুসেনের ‘আজ থেকে তুই নিজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর’, রবীন্দ্র গোপের ‘আমার বুকে অর্ধনমিত পতাকা’, নাসির আহমেদের ‘গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশ’, কামাল চৌধুরীর ‘এখনো দাঁড়িয়ে ভাই’, ত্রিদিব দস্তিদারের ‘বাঙালির ডাকনাম’, মিনার মনসুরের ‘কেউ কী এমন করে চলে যায়’ প্রভৃতি কবিতায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ ওঠে আসে।
নূহ-উল-আলম লেনিন ‘আমরা আজ আর শোক করবো না’ কবিতায় লিখেছেন, ‘আমরা আজ আর শোক করবো না/আমাদের শোক এখন শক্তির দ্যোতনা। ওরা বলেছিল কেউ তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না/ওদের দম্ভ ও ঔদ্ধত্যের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ...।’ আবু জাফর তার ‘বঙ্গবন্ধু মানে’ কবিতায় লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই বায়ান্ন, ছেষট্টি, ঊনসত্তর/বঙ্গবন্ধু মানেই উত্তাল ঊনিশশো একাত্তর। বঙ্গবন্ধু মানেই সাতই মার্চ, দশই জানুয়ারী/বঙ্গবন্ধু মানেই ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বর বাড়ী।’ আনজীর লিটন ‘তিনি আমাদের’ নামক কবিতায় লিখেছেন, ‘কখনো কখনো একটা মানুষ কোটি মানুষের ছায়া/বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর তেমনই একটা মায়া...।’ ‘একটি বুলেট’ কবিতায় সেলিম রেজা লিখেছেন... ক্ষুদ্ধ রাইফেল হাতে/শুধু একটি বুলেট/যে বুলেট সাতকোটি জনতার/যার বিপ্লবী নাম/জয়বাংলা...। ‘হৃদয়ের রজনীগন্ধা’ শীর্ষক কাব্যে গোলাম কিবরিয়া পিনু লিখেছেন, ‘এসো, আমরা মাটির সাথে মিশে যাই/লজ্জায়! লজ্জায়! তাঁর মৃত্যুদিনে কীভাবে দাঁড়াই/রঙিন সজ্জায়...!’
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন- ‘আজকের দিন যদি ব্যর্থ হয় তাহলে আছো কাল, একশ মুজিব যদি মিথ্যে হয় তবুও থাকে সত্য।’ জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বেশকিছু সংকলিত কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য গুলো হল- বেবি মওদুদের ‘মুজিব মঙ্গল’, কবি সুমন্ত রায়ের ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে শ্রেষ্ঠ কবিতা’, প্রত্যয় জসিমের ‘দুই বাংলার কবিতায় বঙ্গবন্ধু’। বিদেশিদের বিভিন্ন লেখায়ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছে। মার্কিন কবি রবার্ট পেইনের ‘দি চার্টার্ড অ্যান্ড দ্য ডেমড’, সালমান রুশদীর ‘মিডনাইট বিলড্রেম’, শেইম’, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পূর্ব-পশ্চিম’ ইত্যাদি। এ ছাড়া জাপানি কবি মাৎসুও শকাইয়া, গবেষক ড. কাজুও আজামা, প্রফেসর নারা, মার্কিন কবি লোরি ওয়ালশ, জার্মান কবি গিয়ার্ড লুইপকে, বসনিয়ার কবি ইভিকাপিচেস্কি ও ব্রিটিশ কবি টেড হিউজসহ অনেকের কবিতায় বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গ এসেছে নানাভাবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে হাজার হাজার কবিতা লেখা হয়েছে। দেশের প্রায় সব কবি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। দেশের বাইরে বিশে^র বিভিন্ন দেশের কবিরাও লিখেছেন। পাশাপাশি মনীষ ঘটক, শওকত ওসমান, মাহমুদুল হক, রাহাত খান, সেলিনা হোসেনের মতো কথাসাহিত্যিকও বঙ্গবন্ধুকে নিবেদন করে কবিতা রচনা করেছেন।
বিশ্বে এমন কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নেই, যাকে নিয়ে রচিত হয়েছে এত বিচিত্র কবিতা। বঙ্গবন্ধু এমন এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব; যার দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভালোবাসা, প্রজ্ঞা, বাগ্মিতা, নেতৃত্বগুণ, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, রসবোধ প্রভৃতি তাকে বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। এমন একজন রাষ্ট্রনায়ককে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যার ঘটনাও সংবেদনশীল কবি সাহিত্যিকদের মনে গভীর ক্ষত ও বেদনা বোধ, দ্রোহ থেকেই এ শিল্প সৃষ্টি হয়। ফলে বেদনাহত কবিরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা করেছেন বহু মর্মস্পর্শী কবিতা। ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতাবলিকে দুটি কালপর্বে ভাগ করা যায়। একটি তার জীবনকালে ১৯৭৫ সালের আগে রচিত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার বহিঃপ্রকাশ; অন্যটি ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর বেদনামথিত উচ্চারণ। পঁচাত্তর পূর্বকালে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যারা কবিতা লিখেছেন; তাদের মধ্যে জসীমউদ্দীন, সুফিয়া কামাল, নির্মলেন্দু গুণ অন্যতম। বাদ যাননি পশ্চিমবঙ্গের কবি-সাহিত্যিকরাও। দক্ষিণারঞ্জন বসু, অন্নদাশঙ্কর রায়, সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র চক্রবর্তী, সত্যেশ্বর মুখোপাধ্যায়, শান্তিকুমার ঘোষ, বিনোদ বেরা, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গের আরো অনেক কবি-সাহিত্যিক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিত লিখেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম কবিতা লেখার কৃতিত্ব কবি নির্মলেন্দু গুণের। ১৯৬৭ সালের ১২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি প্রথম ‘প্রচ্ছদের জন্য’ শিরোনামে একটি কবিতা লেখেন। কবিতাটি কবি উৎসর্গ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি তখনো ‘বঙ্গবন্ধু’ হননি। পরে অবশ্য নির্মলেন্দু গুণ কবিতাটির নাম বদলে ‘স্বদেশের মুখ শেফালি পাতায়’ রাখেন। ১৯৬৯ সালে আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় জেলবন্দি শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে ‘সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ রেসকোর্স ময়দানে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে। ওই সভায় সে সময়ের ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কবি জসীমউদ্দীন ‘বঙ্গবন্ধু’ কবিতাটি রচনা করেন। তা হচ্ছে- ‘মুজিবুর রহমান/ওই নাম যেন ভিসুভিয়াসের অগ্নি উগারি বান। বঙ্গদেশের এ প্রান্ত হতে সকল প্রান্ত ছেয়ে, জ্বালায় জ্বলিয়ে মহাকালের ঝঞ্ঝা অশনি বেয়ে...।’ সত্তরের দশকের শুরুতে ত্রিপুরার কবি রামপ্রসাদ দত্ত ‘ইয়াহিয়া খান তাণ্ডবনৃত্য’ শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি পালাগান রচনা করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কবিতা লিখে কারাবন্দি হন পাঞ্জাবি কবি আহমেদ সালিম। লাহোর ডিস্ট্রিক্ট জেলে বসে লেখা তার ‘সিরাজউদ্দৌলা ধোলা’ কবিতা। তার দৃষ্টিতে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সিরাজউদ্দৌলার মতো স্বাধীনতার রক্ষক। ভারতের প্রথিতযশা উর্দুভাষী কবি ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব কাইফি আজমি ‘বাংলাদেশ’ শীর্ষক কবিতা রচনা করেন। কেননা, ‘জীবিতের চেয়েও অধিক জীবিত’ বঙ্গবন্ধু এ দেশের কবি-সাহিত্যিকদের চেতনালোকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম কবিতা রচনা করেন বঙ্গবন্ধুর বাল্যবন্ধু মৌলবী শেখ আব্দুল হালিম। বঙ্গবন্ধুর মরদেহ কাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে সমাধিস্থ করার পর তিনি কবিতাটি লেখেন। আরবি ভাষায় লেখেন এ কবিতা। পরে তিনি নিজেই আরবি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেন- হে মহান, যার অস্থি-মজ্জা, চর্বি ও মাংস এই কবরে প্রোথিত/যার আলোতে সারা হিন্দুস্তান, বিশেষ করে বাংলাদেশ আলোকিত হয়েছিল/আমি আমার নিজেকে তোমার কবরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করিতেছি, যে তুমি কবরে শায়িত/আমি তোমার মধ্যে তিনটি গুণের সমাবেশ দেখেছি, ক্ষমা, দয়া ও দানশীলতা- নিশ্চয়ই তুমি জগতে বিশ্বের উৎপীড়িত এবং নিপীড়িতদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলে/সেহেতু অত্যাচারীরা তোমাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে- আমরা মহান আল্লাহর নিকট তোমার আখিরাতের মঙ্গল কামনা করি। বিদায়! বিদায়! বিদায়! হে মহান জাতির জনক।’
বাংলাদেশের উর্দুভাষী শীর্ষস্থানীয় কবি নওশাদ নূরী ‘উত্থান-উৎস’ শীর্ষক এক কবিতা লেখেন। তিনি লেখেন- সে আছে, সে আছে-সর্বদা হাজির সে যে, অফুরান শক্তি হয়ে সে আছে/সে আছে সে অমর, মৃত্যুঞ্জয়ী, মৃত্যু নেই তার।’ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৭ আগস্ট আরো একটি কবিতা লেখেন নওশাদ নূরী। কবিতার শিরোনাম ‘নজম টুঙ্গিপাড়া’, ...‘তোমরা কি জান? তোমরা কী জান? পথের শুরুটা হয়েছিল এইখানে/পথ খোয়া গেল, হায়, সেও এইখানে।’ পঁচাত্তর সালে আরো একটি কবিতা রচিত হয় সাংবাদিক-সাহিত্যিক সন্তোষ গুপ্তের কলমে; নাম ‘রক্তাক্ত প্রচ্ছদের কাহিনী’। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেনাশাসিত বাংলাদেশে নির্মলেন্দু গুণই সবার আগে প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করেন তার ‘আজ আমি কারো রক্ত চাইতে আসিনি’ কবিতায়। তবে নির্মলেন্দু গুণের কবিতাতেই সবচেয়ে বেশিবার বঙ্গবন্ধু এসেছেন ঘুরেফিরে নানামাত্রিকতায়। কবির ‘মুজিবমঙ্গল’ কাব্যগ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা ত্রিশটির মতো কবিতা, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘প্রচ্ছদের জন্য : শেখ মুজিবুর রহমানকে’, ‘সুবর্ণ গোলাপের জন্য’, ‘শেখ মুজিব ১৯৭১’, ‘সেই খুনের গল্প ১৯৭৫’, ‘ভয় নেই’, ‘রাজদণ্ড’, ‘আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি’, ‘মুজিব মানে মুক্তি’, ‘শেষ দেখা’, ‘সেই রাত্রির কল্পকাহিনী’, ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’, ‘শোকগাথা : ১৬ আগস্ট ১৯৭৫’, ‘পুনশ্চ মুজিবকথা’, ‘আগস্ট শোকের মাস, কাঁদো’, ‘প্রত্যাবর্তনের আনন্দ’ ইত্যাদি।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর কয়েকজন প্রতিবাদী তরুণ প্রকাশ করেন একটি কবিতা-সংকলন। সংকলনটির শিরোনাম ছিল- ‘এ লাশ আমরা রাখব কোথায়?’ এটি প্রকাশ হয় ১৯৭৮ সালে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এটিই ছিল প্রথম সংকলন। এ দুঃসাহসিক সংকলনের পরিকল্পনা করেছিলেন ছড়াকার আলতাফ আলী হাসু। সংকলনে ত্রিশটি কবিতা স্থান পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাত সংগঠন ‘সূর্য তরুণ গোষ্ঠী’র নামে সংকলনটি প্রকাশ হয়। ‘এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়’ সংকলনটি প্রকাশ হয়। ওই সংকলনে তরুণ কবি কামাল চৌধুরী ‘টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে’ নামে অসাধারণ এক কবিতা রচনা করেন। কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর প্রতিবেশী। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষতবিক্ষত হৃদয় থেকে উৎসারিত হয়েছিল সারাদেশের শোকগ্রস্ত মানুষের মনের কথা-এই বাংলার আকাশ-বাতাস, সাগর-গিরি ও নদী/ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি/...এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা-পিতা-বোন-ভ্রাতা।’
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ‘বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে, তার আঁকা ছবি, মুছে ফেল মিছে অশ্রু তোমার, আর কত রক্তের দরকার হবে, আমি সাক্ষী, আমার পরিচয়সহ বেশকিছু কবিতা রচনা করেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। হাসান হাফিজুর রহমান, সিকান্দার আবু জাফর, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, কায়সুল হক, আবুবকর সিদ্দিক, মনজুরে মওলা, বেলাল চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক, আসাদ চৌধুরী, সিকদার আমিনুল হক, মহাদেব সাহা, অসীম সাহা, রবিউল হুসাইন, হেলাল হাফিজ, মুহম্মদ নূরুল হুদা, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, হুমায়ুন আজাদসহ বাংলা ভাষার সব কবি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসংখ্য কবিতা প্রকাশ পায়। যা এখনো অব্যাহত আছে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু আলোক বর্তিকা হয়ে সাহিত্যে আলো ছড়াবেন অনাগত দিনেও।
মোতাহার হোসেন : সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম।
আজকালের খবর/আরইউ