প্রকাশ: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০১ পিএম

একাত্তরের গল্প বলা মানেই শুধু যুদ্ধ দেখানো নয় এ কথা আমি সবসময়ই মনে করি। প্রচলিত যুদ্ধনির্ভর সিনেমাগুলোতে আমরা প্রায়ই দেখি গুলি, রক্তপাত, অত্যাচারের দৃশ্যের আধিক্য। কিন্তু আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ছবি আরও গভীর, আরও মানবিক। তাই ‘জয়যাত্রা’ নির্মাণের সময় সচেতনভাবে সেই প্রচলিত ফর্মুলা থেকে সরে এসেছি।
যুদ্ধের সরাসরি দৃশ্য না দেখিয়ে দেখাতে চেয়েছি যুদ্ধের ভেতর সাধারণ মানুষের জীবন, তাদের কষ্ট, না বলা ভয়, সংগ্রাম আর টিকে থাকার গল্প। কারণ মুক্তিযুদ্ধ ছিল না শুধু অস্ত্রধারী যোদ্ধাদের লড়াই– এটা ছিল গ্রামের মাটি, নদীপার, ঘরছাড়া নারী-শিশু, ক্ষুধার্ত মানুষের নীরব কান্না আর মানসিক যুদ্ধেরও গল্প।
মানুষের ভেতরের সেই টানাপোড়েন, ভাঙচুর, আশা এবং মানবিকতার লড়াই– এসবই আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার আত্মা। তবে দুঃখের বিষয়, প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবির প্রতি দর্শকের আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম।
মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার মুক্তির পর হলে তেমন দর্শক আসে না। অথচ পরে যখন টিভিতে বা ইউটিউবে ছবিটি দেখা যায়, তখন অসংখ্য মানুষ আগ্রহ নিয়ে দেখেন। গল্পের প্রতি মানুষের অনাগ্রহ নেই, হয়তো হলে গিয়ে এই ধরনের ছবি দেখার অভ্যাস তৈরি হয়নি।
আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের কাজগুলোকে দর্শকদেরই পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। কারণ, এটি তাদেরই ইতিহাস, তাদেরই সত্তা। নির্মাতা যতই শ্রম ও সততা দিয়ে কাজ করুন না কেন, দর্শক হলে না এলে এসব কাজ টিকে থাকবে না। তাই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র হলে গিয়ে দেখে নির্মাতাদের পাশে দাঁড়ানো এ দায়িত্বও আমাদের দর্শকদেরই।
লেখক: তৌকীর আহমেদ, অভিনেতা ও নির্মাতা
আজকালের খবর/আতে