মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর ২০২৫
জলবায়ু তহবিলের ৮৯১ প্রকল্পে ২১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৫১ পিএম
বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে জাতীয় তহবিলের অর্ধেকেরও বেশি অংশ দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটি) থেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর ৫৪ শতাংশ বরাদ্দে দুর্নীতি হয়েছে। প্রাক্কলিত এই পরিমাণ প্রায় ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ২ হাজার ১১০ কোটি টাকার বেশি।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

টিআইবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিসিসিটি থেকে মোট ৪৫৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ অনুমোদিত হয়েছে। এর অর্ধেকের বেশি বরাদ্দ দুর্নীতিগ্রস্ত। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বিবেচনা, যোগসাজশ ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রকল্প অনুমোদনের প্রবণতা স্পষ্ট। অথচ তহবিল ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তারা অনিয়ম রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি।

টিআইবি জানায়, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রয়োজন ১২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল মিলিয়ে বছরে গড়ে বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার—প্রয়োজনের শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।

জাতীয় তহবিল থেকে বরাদ্দ প্রতিবছর গড়ে ৮ দশমিক ২ শতাংশ হারে কমেছে, বিপরীতে আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে বরাদ্দ বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৮ শতাংশ হারে। তবু বরাদ্দের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অতি সীমিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও ব্যর্থতা নিয়মিত ঘটনা। ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে—গড়ে ৬৪৮ দিনের প্রকল্প শেষ হতে লেগেছে ১ হাজার ৫১৫ দিন, অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশ সময় বৃদ্ধি। কোনো কোনো চার বছর মেয়াদি প্রকল্প শেষ হতে লেগেছে ১৪ বছর পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক তহবিলেও একই চিত্র—৫১টি প্রকল্পের মধ্যে ২১টির মেয়াদ গড়ে ৫২ শতাংশ বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার—যা একেবারেই নগণ্য।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় তহবিলের ৫৪ শতাংশই দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অর্থ লুটপাট করেছে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। জবাবদিহিতা, সুশাসন ও দক্ষতার অভাবের কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই।

ড. ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, জলবায়ু অর্থায়নে প্রকৃত উপকারভোগীদের অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে টেকসই উন্নয়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

আজকালের খবর/ এমকে








http://ajkalerkhobor.net/ad/1751440178.gif
সর্বশেষ সংবাদ
ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুর আহসান মুন্সীর মনোনয়নে দেবীদ্বারে আনন্দ মিছিল
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শারীরিক শিক্ষা’ পদ পুনর্বহালের দাবিতে ইবিতে মানববন্ধন
চাচাকে বাবা বানিয়ে বিসিএস ক্যাডার, করা হবে ডিএনএ টেস্ট
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট দল ঘোষণা
মাঝরাতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী গ্রেপ্তার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
বগুড়া-৬ আসন থেকে লড়বেন তারেক রহমান
বিএনপির প্রার্থী তালিকায় হেভিওয়েটসহ যাদের নাম নেই
ময়মনসিংহ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ
স্বামী বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় কাঁদলেন স্ত্রী
ঋত্বিক কুমার ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী, শিল্পকলায় বিশেষ আয়োজন
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft