প্রকাশ: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৪০ পিএম

মজলুম মানবতার কবি ফররুখ আহমেদ এর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে কবির স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এর উদ্যোগে আবৃত্তি সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতুর সভাপতিত্বে স্নেহা ইসলাম সামিহা ও সাবিকুন নাহার সূচীর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট কবি ড. মাহবুব হাসান, অধ্যাপক ড. সুমন সাজ্জাদ, মাহবুব মুকুল, ড. কাজল রশিদ শাহীন, কবি বোরহান, মাহমুদ, আবিদ আজম, কালের ধ্বনির সম্পাদক কবি ইমরান মাহফুজ।
আবৃত্তি শিল্পী হিসেবে ছিলেন- কবি শাকিল মাহমুদ, কবি তানজিনা ফেরদৌস, কবি দিদার মুহাম্মাদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও জাকসু নেতৃবৃন্দ।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ বলেন, আমি আমার দীর্ঘ সাহিত্য জীবনে এই ক্যাম্পাসে ফররুখ আহমেদকে নিয়ে কোন অনুষ্ঠান বা সাহিত্যে তার অবদান নিয়ে ডিসকাশন দেখিনি, আজই প্রথম। যেহেতু বহুদিন পর আজ হচ্ছে এবং জাকসু আয়োজন করেছে তাই এটার অবশ্যই একটা তাৎপর্য আছে, সেই তাৎপর্য টাকে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। আমাদের পাঠ্যপুস্তকে বা সাহিত্য সংস্কৃতিতে একটি মহলের প্রভাবে ফররুখ আহমেদকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। কিন্তু সাহিত্যে যার যতটুকু অবদান তার স্বীকৃতি অবশ্যই দিতে হবে। কবি ফররুখ আহমেদ তার বিশ্বাস ও সততার ওপর চিরজীবন অটল ছিলেন।
কবি ড. মাহবুব হাসান বলেন, ফররুখ আহমেদকে 'মুসলিম রেনেসাঁর কবি', 'মুসলমানের কবি', 'পাকিস্তানপন্থী কবি' বলে ফ্রেমিং করে তাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। অথচ তিনি মানুষকে মানুষের মত করেই বিবেচনা করে এসেছেন তার লেখায়। ঔপনিবেশিক সময় থেকে আমরা আমাদের দখলদার শাসক শ্রেণিকে সাহিত্য সংস্কৃতির একক কর্ণধার ভেবে আসার ফলই হলো বাংলার ফররুখের মত কবিদের অবজ্ঞা করা।
জাকসুর সাহিত্য সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, মজলুম ও শোষিতের কবি ফররুখ আহমদ স্মরণে আলোচনা সভা ও আবৃত্তি সন্ধ্যার আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)। বহু বছর ধরে কবিকে বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে উনার সাহিত্যকর্মকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। মানুষের চিন্তা চেতনার স্বাধীনতা হরণ করে সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজম তৈরি করে রাখা হয়েছে এদেশের সূচনালগ্ন থেকেই। আমরা চাই নতুন বাংলাদেশে কলকাতা কেন্দ্রীক ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন মুক্ত হয়ে এই ভূ-খণ্ডের মাটি ও মানুষের স্বতন্ত্র সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চিত হোক। এই বাংলার মানুষের উন্মুক্ত সাহিত্য চেতনার স্বাধীন বিকাশের মাধ্যমেই আমরা এই দেশের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটাতে পারবো।
আজকালের খবর/ওআর