দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। আজ ১২ অক্টোবর (রবিবার) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা কেন্দ্রে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম আনুষ্ঠানিকভাবে সারা দেশে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মিজ্ নূরজাহান বেগম ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
এই কর্মসূচিতে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে উদ্বোধনী শেষে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মিজ্ নূরজাহান বেগম বলেন, ‘টাইফয়েডে এখনো দেশের শিশুদের মৃত্যু হয়, এটা আমাদের লজ্জার। ডায়রিয়া, রাতকানা রোগসহ অনেক কিছু আমরা প্রতিরোধ করেছি, এবার টাইফয়েড প্রতিরোধেও সফল হব ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য রোগ প্রতিরোধ। যত বেশি মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের প্রতিরোধমূলক টিকার আওতায় আনা যাবে, ততই হাসপাতালে ভিড় ও চাপ কমবে।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘টাইফয়েড এমন একটি রোগ, যা সচেতনতা ও টিকাদানের মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা যদি প্রতিটি শিশুর কাছে টিকা পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে দেশে টাইফয়েডে মৃত্যুর ঘটনা কার্যত বন্ধ করা সম্ভব হবে। এ উদ্যোগ আমাদের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করবে।’
এর আগে, গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, জন্মসনদবিহীন শিশুরাও এই টিকার আওতায় থাকবে যাতে কেউ বাদ না পড়ে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় টাইফয়েড টিকা কর্মসূচি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে এই টিকা, যা সরকার পেয়েছে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন সহায়তা সংস্থা গ্যাভির সহযোগিতায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনপ্রাপ্ত এই টিকাটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। ইতিমধ্যে নেপাল, পাকিস্তানসহ আটটি দেশে সফলভাবে ব্যবহার হয়েছে। কোনো দেশেই বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, অভিভাবকেরা সন্তানদের নিবন্ধনের জন্য https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। নিবন্ধনের পর সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।