প্রকাশ: সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:৫০ পিএম

নানা চ্যালেঞ্জ, প্রতিকূলতা ও সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর ন্যাশনাল ব্যাংক এখন আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে নতুন আঙ্গিকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় মনিটরিং, পরিচালনা পর্ষদের সুদূরপ্রসারী নীতি নির্ধারণ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদিল চৌধুরীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানটি নতুন ব্যবস্থাপনার নিরলস প্রচেষ্টায় ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে।
নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা ও আমানত সংগ্রহে চমক : জানা যায়, গত দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট, ২০২৫) ব্যাংকটিতে খোলা হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার নতুন অ্যাকাউন্ট। নতুন এই অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে সংগৃহীত আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা। এটি শুধু একটি আর্থিক অর্জন নয়, বরং ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দৃশ্যমান প্রমাণ। ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞদের মতে, এত অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে শুধু গ্রাহকের মধ্যে নতুন করে আস্থা সঞ্চারিত হওয়ার কারণে।
ঋণ আদায়ে সফলতা : শুধু নতুন আমানত সংগ্রহই নয়, সমানভাবে অনিয়মিত ঋণ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের ফলে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরছে এবং ব্যাংকের স্থিতিশীলতা আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। সম্প্রতি ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসির আয়োজনে আকিজ বশির গ্রুপ ও এমিনেন্স ইলেকট্রিক ওয়্যার অ্যান্ড ক্যাবলস লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তির মাধ্যমে আকিজ বশির গ্রুপ ন্যাশনাল ব্যাংকের গ্রাহক এমিনেন্স ইলেকট্র্রিক ওয়্যার অ্যান্ড ক্যাবলস লিমিটেডের বন্ধককৃত মেশিনারিজ এবং ভূমি ক্রয় করবে, যার মাধ্যমে আগামী দুই মাসে ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসির খেলাপি ঋণ কমে যাবে এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের ঋণ ও ক্যাশ ব্যবস্থাপনায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ন্যাশনাল ব্যাংক প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে এবং গত আড়াই মাসে ১৬২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে, যা বছর শেষে হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। গ্রাহকসেবায় নতুন
গ্রাকহসেবায় নতুন উদ্যোগ: গ্রাহকসেবায় গুণগত পরিবর্তন আনতে ব্যাংকটি ইতিমধ্যেই একাধিক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং আরও সহজ ও দ্রুত করা হয়েছে। গ্রাহকরা ঘরে বসেই অনেক সেবা নিতে পারছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ন্যাশনাল ব্যাংকের অনেক শাখায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সেবার মানোন্নয়নে কাজ চলছে। এর পাশাপাশি নতুন গ্রাহক আকর্ষণে সঞ্চয়ী আমানত, ঋণ এবং রেমিট্যান্স সেবায় আকর্ষণীয় অফার চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশি রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে প্রবাসী গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা চালু করা হয়েছে।
ফলে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের কাছেও ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতি আস্থা বাড়ছে। ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদিল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সময়ই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সততা, পেশাদারিত্ব এবং মানসম্পন্ন ব্যবসার মাধ্যমে আমরা ন্যাশনাল ব্যাংককে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাংকের কাতারে নিয়ে যেতে সক্ষম হব। প্রতিটি শাখার প্রতিটি সিদ্ধান্তই ব্যাংকের ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করে। তাই প্রত্যেক কর্মীকে দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।’
আজকালের খবর/আতে