প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:০৭ পিএম

চুয়াডাঙ্গা অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে অনলাইন জুয়াসাইট 1xBet এর মাস্টার এজেন্ট শুভংকর কুমার দাস (২৩) ও তার সহযোগী হাফিজুল ইসলাম হ্যাপিকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে চুয়াডাঙ্গা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। এ সময় তাদের নিকট থেকে অনলাইন জুয়ার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্রান্ডের দামী স্মার্ট ফোন ও সিম উদ্ধার করা হয়। তাদের নিকট থেকে উদ্ধারকৃত ফোনে অনলাইন জুয়া খেলা সংশ্লিষ্ট এপ্লিকেশন- 1xBet, Reddy, MelBet, MobCash, Teligram, Binance, bKash, SellFin, Nagad, Rocket লগইন অবস্থায় ছিল।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলার (বিপিএম-সেবা) দিকনির্দেশনায় সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের (CCIC) ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সামসুদ্দোহার নেতৃত্বে উপ-পুলিশ পরিদর্শক সৌমিত্র সাহা, মুহিদ হাসান, সহকারি উপ-পুলিশ পরিদর্শক রজিবুল, রমেন, আরিফ সঙ্গীয় ফোর্সসহ গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত সাড়ে ৩টার সময় দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর দাসপাড়ায় অভিযান চালিয়ে জয়রামপুর গ্রামের দয়াল দাসের ছেলে অনলাইন জুয়ার মাস্টার এজেন্ট শুভংকার কুমার দাস এবং একই উপজেলার ডুগডুগি গ্রামের সাহাদৎ হোসেনের ছেলে মো. হাফিজুল ইসলাম হ্যাপিকে গ্রেফতার করেন।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে অনলাইন জুয়ার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্রান্ডের স্মার্ট ফোন পর্যালোচনা করে দেখা যায় আসামী শুভংকর অনলাইন জুয়াসাইট 1xBet এর মাস্টার এজেন্ট। সে দামুড়হুদা থানাসহ আশপাশ এলাকার উঠতি বয়সী যুবকদের টার্গেট করে তাদের ফোনে জুয়ার বিভিন্ন ধরণের অ্যাপস্ ইন্সটল করে জুয়ার সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে দিয়ে অনলাইন জুয়া খেলায় প্রলুব্ধ করছে। যুবসমাজ অনলাইন জুয়া খেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে এবং ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।
পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা (বিপিএম-সেবা) বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত 1xBet, MelBet সহ যতগুলো বেটিং সাইট রয়েছে তার বেশিরভাগই রাশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরে টাকা পাঠালে ব্যালেন্স যোগ হয়ে যায় এবং দেশের টাকা বাইরে চলে যায়। ব্যালেন্স যুক্ত হওয়ার পরে সাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলার যে অপশন রয়েছে সেগুলো থেকে যেকোনো একটি পছন্দ অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট হোল্ডার খেলতে পারে। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। জুয়ার এজেন্টরা অনলাইন জুয়া সংশ্লিষ্ট অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক নিয়োগ দেয়। সরকার অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে সাজাসহ মোটা অংকের আর্থিক জরিমানার বিধান রেখে সাইবার সুরক্ষা আইনটি অনুমোদন করেছেন।
তিনি অনলাইন জুয়াসহ সকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা ও অনলাইন জুয়ায় আকৃষ্ট যুবকদের ধ্বংসের দিক থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার অনুরোধ জানান। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিটি থানা এলাকায় অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে জেলা পুলিশের অভিযান অব্যহত থাকবে।
আজকালের খবর/ওআর