
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পেশাগত অধিকার, মর্যাদা ও স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে ঘোষিত ৭ দফা দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের গাজীপুর অঞ্চলে কর্মরত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নিজ নিজ কর্মস্থলে নির্ধারিত সময়ের পরে অতিরিক্ত ১ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করে প্রতীকী কর্মসূচি পালন করেন।
এই ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচিটি ছিলো সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, কর্মস্থলভিত্তিক এবং উৎপাদনশীলতায় বিঘ্ন না ঘটিয়ে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে প্রতিবাদ জানানোর এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এমন দৃশ্য দেখা গেছে, গাজীপুর সড়ক ও জনপথের জেলা কার্যালয়ে। ওই সময় সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ওসমান তার নির্ধারিত কর্মঘন্টা থেকে এক ঘন্টা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি এই প্রতীকি কর্মসূচি পালন করেন।
তাদের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাক্রমের স্বীকৃতি ও মান রক্ষা, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য আলাদা পদোন্নতি কাঠামো ও পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত পদে নিয়োগ ও পদোন্নতির নিশ্চয়তা, কারিগরি খাতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের স্বীকৃত অবদান ও দায়িত্ব নির্ধারণ, সরকারি প্রকল্পে বাধ্যতামূলকভাবে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সম্পৃক্তকরণ, চাকরি নিরাপত্তা, ন্যায্য বেতন কাঠামো ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষকদের মর্যাদা ও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন।
গাজীপুর সওজ কার্যালয়ে কর্মরত এক প্রকৌশলী বলেন, আমরা কোন ধর্মঘট করিনি, কাজ বন্ধ করিনি। বরং অতিরিক্ত ১ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করে বুঝিয়ে দিয়েছি-আমরা দায়িত্বশীল, সচেতন এবং আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক ও সময়োপযোগী।
আরেকজন প্রকৌশলী বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে অবমূল্যায়িত। আমাদের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রকৌশল খাত আরও গতিশীল হবে।
বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, এই কর্মসূচি শুধু গাজীপুরেই নয়, দেশব্যাপী বিভিন্ন দপ্তরে একযোগে পালিত হয়েছে।
এ সময় তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, দাবিগুলো দীর্ঘদিনের হলেও বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। সরকার যদি দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে না আসে, তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এই প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা তাদের দায়িত্ববোধ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং পেশাগত স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিয়েছেন। সময় এসেছে সরকার, নীতিনির্ধারক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের। দেশের প্রযুক্তি খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।