
ঢাকায় ঝটিকা মিছিলসহ নাশকতার পরিকল্পনা ও অর্থায়নের অভিযোগে নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদ্দাম হোসেন পাভেলসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তানজিল হোসেন অভি, বাউফল থানার সূর্যমনি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান হাওলাদার, বঙ্গবন্ধু কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ কে এম খোরশেদ আলম, বংশাল থানা ৩২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মো. দেলোয়ার হোসেন বাবলু, উত্তরা পূর্ব থানার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আল মামুন ভুইয়া, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মো. কায়কোবাদ ওসমানী ও মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার খিতিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাত ১১টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাবেক এমপি পাভেলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-সাইবার বিভাগের একটি টিম। একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডিবি মতিঝিল বিভাগের একটি টিম সবুজবাগের মানিকদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভি ও আনিসুরকে গ্রেপ্তার করে। ডিবির একই বিভাগের অভিযানে রাত সোয়া ৯টার দিকে পান্থপথ এলাকা থেকে খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পরে সাড়ে ৬টার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন নয়াবাজার এলাকা থেকে বাবলুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি লালবাগ বিভাগ।
ডিবি গুলশান বিভাগের অভিযানে কোতোয়ালি থানাধীন পুলিশ ক্লাবের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামুন ভূঁইয়াকে। রাত ১২টার দিকে রামপুরা থানাধীন মালিবাগ চৌধুরী পাড়া এলাকা থেকে কায়কোবাদ ওসমানীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি সাইবার বিভাগ। প্রায় একই সময় ডিবি মতিঝিল বিভাগের অভিযানে কাকরাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আনোয়ার হোসেনকে।
গ্রেপ্তার সকলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে জানিয়ে পুলিশ বলছে, তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা ‘বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ’ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির ‘অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল’।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাঁচদিনে রাজধানীতে ধানমণ্ডি ও তেজগাঁও এলাকায় অন্তত দুই বার মিছিল করেছে। তার আগেও গুলিস্তানে তাদের মিছিলের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, শুক্রবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিল করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ধানমণ্ডিতেও মিছিলের খবর পাওয়া গেছে।
নীলফামারীর সাবেক এমপি পাভেলকে গ্রেপ্তারের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় হত্যা চেষ্টার একটি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার ঢাকার মহানগর হাকিম পার্থ ভদ্র তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই সিয়াম আহমেদ পাভেলকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এমারত হোসেন বাচ্চু ও এস এম শরিফুল ইসলাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তবে মামলার মুল নথি না থাকায় জামিন শুনানি হয়নি। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেয়।
পাভেলের আইনজীবী এমারত হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘মামলার মুল নথি পাওয়ার পর জামিনের বিষয়ে শুনানি হবে।’
নিউমার্কেট থানার এই মামলায় বলা হয়েছে, গত ২ অগাস্ট নিউমার্কেটের ২ নম্বর ফটকের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালানো হয়। এতে হাবিবুর রহমান, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. মাজেদুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, মাহাবুব, নাহিদ, রাসেল, মিরাজ, ইডেন কলেজের শাম্মী আক্তার, সিটি কলেজের হাফিজা আক্তার ও জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমা আহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ২৬ অগাস্ট নিউমার্কেট থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন হাবিবুর রহমান।
আজকালের খবর/ওআর