গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুরে গাজীপুর কমপ্লেক্স মার্কেটে এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন থানায় চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এজাহারে ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেন, তিনি তার ভাবি তাসলিমাকে সঙ্গে নিয়ে জয়দেবপুর পৌর মার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। পরে গাজীপুর শপিং সেন্টারের প্রথম তলায় অবস্থানকালে ওয়াশরুম ব্যবহারের প্রয়োজন হলে তিনি একা সেদিকে রওনা দেন। তখন এক ব্যক্তি হঠাৎ করে মুখ চেপে ধরে টানাহেঁচড়া করে ওয়াশরুমের পাশে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার পরনের বোরকার হাতা ছিঁড়ে যায়।
নারীর চিৎকারে আশপাশ থেকে ওয়াহিদ (৫৫), মোশাররফ (৫০) ও আলম (৩৫) নামে তিনজন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু তারা সাহায্য না করে উল্টো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে রক্ষায় তৎপর হন এবং ভুক্তভোগীকে কক্ষে আটকে রাখেন। তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, মার্কেটের বদনাম করা যাবে না, কেউ জানলে খারাপ পরিণতি হবে।
দীর্ঘ সময় ধরে আটক থাকার পর ভাবি তাসলিমা খুঁজতে গিয়ে চিৎকার শুনে তাকে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে বুঝতে পারেন। এরপর তিনি আশপাশের লোকজনকে ডেকে এনে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনার বিষয়ে উপস্থিত লোকজনকে বিস্তারিত জানানো হলে অভিযুক্ত কালামকে আটক করা হয়। তবে কিছুক্ষণ পর ওয়াহিদ, মোশাররফ ও আলম -যারা নিজেদের দোকানদার ও মালিক পক্ষের লোক বলে পরিচয় দেন তাকে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে নিয়ে যান।
গাজীপুর সদর মেট্রো থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এ ঘটনায় মার্কেটজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মার্কেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। স্থানীয়রা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও বারবার এমন ঘটনা প্রমাণ করে, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপত্তায় এখনও বড় ফাঁক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনা।
আজকালের খবর/ এমকে