গাজীপুরে বাস্তবায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ভুল নকশার কারণে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) এলাকাজুড়ে প্রায় দীর্ঘ দুই বছর ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন পাঁচ হাজারের অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবার। রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ অংশে ইউটার্ন বা ইউ লুপ না রাখার কারণে তারা প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে উল্টো পথে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটকের সামনে বিআরটির তিন লেনের সড়কে ইউটার্ন বা ইউ লুপের কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে ইনস্টিটিউটে প্রবেশ কিংবা বের হতে হলে সংশ্লিষ্টদের উল্টো পথে চলতে হয়। এতে করে জয়দেবপুর বাজার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।
বিএআরআই কর্মকর্তা ও আবাসিকে বসবাসকারী পরিবার এবং ওখান থেকে নিয়মিত রিকশাচালকরা অভিযোগ করে বলেন, এই অব্যবস্থার কারণে নিয়মিত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীরা। রিকশাচালক ও পথচারীরাও প্রতিনিয়ত ঝুঁকিতে পড়ছেন। তাদের মতে, কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের শিকার হচ্ছেন নিরীহ জনগণ।
স্থানীয়রা জানান, টঙ্গী থেকে গাজীপুর শিববাড়ি পর্যন্ত নির্মিত বিআরটি সড়কে মাঝেমধ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন অবকাঠামো ও কাউন্টার, যা আজও পর্যন্ত অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাস্তার দুই পাশ থেকে যাতায়াতের জন্য নির্মিত ফুট ওভার ব্রিজ স্থাপনাগুলোও কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। অথচ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
নির্মাণকালের সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিএআরআই কর্তৃপক্ষ বিআরটি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের স্পষ্টভাবে অনুরোধ জানিয়েছিলেন যাতে ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের সামনে ইউ লুপ বা ইউটার্ন রাখা হয়। কিন্তু তাদের প্রস্তাব উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনগণ বিআরটি কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় জোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, দ্রুত ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটকের সামনে ইউ লুপ বা ইউটার্ন স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি যেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এখনো ইউটার্ন নেই, সেসব জায়গায় দ্রুত ইউটার্ন নির্মাণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এদিকে বি আর টি কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। এতে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সচেতন মহল মনে করেন , বিআরটি’র ভুল পরিকল্পনা এখন গাজীপুরবাসীর জীবনে দুর্ভোগ ও অনিরাপত্তার নামান্তর। বিশেষ করে দেশের অন্যতম প্রধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএআরআই-এর কর্মীরা প্রতিদিন যে ভোগান্তির মুখোমুখি হচ্ছেন, তা দ্রুত সমাধানের দাবি রাখে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।
আজকালের খবর/ এমকে