হাসপাতালে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫, ৪:১৫ পিএম
জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আহত শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেছেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দেন আবদুল্লাহ আল ইমরান। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে শেখ হাসিনা ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল ইমরান এই নির্দেশ শুনেছেন বলে জানান।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগরে পানির ট্যাংক এলাকায় আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হন। তার বাঁ পায়ে, হাঁটুর নিচে গুলি লাগে। পরে তাকে আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, ২৬ বা ২৭ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ১০টার দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। ইমরান জানান, শেখ হাসিনা তার কাছে এসে কথা বলেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করলে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাকে আপা বলো।”

ইমরানের ভাষ্যমতে, কথোপকথনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনা জানতে পারেন, তিনি একজন আন্দোলনকারী। এরপর তাকে জিজ্ঞেস করেন, পুলিশ তোমাকে গুলি করেছে?” ইমরান উত্তরে বলেন, “হ্যাঁ, সরাসরি পুলিশ গুলি করেছে। তবে পুলিশের পোশাক পরা কারা ছিল, সেটা শনাক্ত করতে পারিনি।

জবানবন্দিতে ইমরান আরও বলেন, শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার সময় হাসপাতালের হেল্পডেস্কে গিয়ে "নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ" নির্দেশ দেন, যা তিনি নিজ কানে শুনেছেন। তবে সে সময় তিনি এই কথার অর্থ বুঝতে পারেননি।

পরে দেখা যায়, তার সময়মতো অস্ত্রোপচার হয়নি, প্রয়োজনীয় ওষুধও হাসপাতাল থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার বাবা তাকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। তখন তিনি বুঝতে পারেন, নির্দেশটির অর্থ তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে আটকে রাখা। এমনকি তার পা কেটে তাকে কারাগারে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল বলে দাবি করেন তিনি।

এই ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে সরাসরি দায়ী করেন ইমরান। গতকাল মামলাটির প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মাইক্রোবাসচালক খোকন চন্দ্র বর্মণ।

গত বছরের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে গতকাল রবিবার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ সূচনা বক্তব্য এবং প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয় এবং তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধেও বিচার শুরু হয়।

এ মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হন। গতকাল তাকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মামলার কিছু অংশ বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

আজকালের খবর/বিএস 








http://ajkalerkhobor.net/ad/1751440178.gif
সর্বশেষ সংবাদ
আদালতে স্বীকারোক্তি: চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন রিয়াদ
জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা
পরিবারের অমতে বিয়ে করায় দম্পতিকে গুলি করে হত্যা
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি
প্রকৃত অপরাধীদের শায়েস্তা করতে হবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
বাস-সিএজি মুখোমুখি সংঘর্ষ: নিহত ১, আহত ৫
জুলাইয়ে হামলার উসকানিদাতা হয়েও বিচারের বাইরে জাবির দুই শিক্ষক
সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশিদ চট্টগ্রামে মারা গেছেন
সাজিদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল ইবি, রাবি ও ঢাবি
বরিশালের গৌরনদীতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft