মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির অর্থনীতিতে নতুন করে চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই অর্থনৈতিক সংকটে থাকা মিয়ানমারের জন্য পোশাক শিল্প হলো প্রধান আয়ের খাত। এই খাতে বর্তমানে পাঁচ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন, যা দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।
যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি বাজার, আর সেই বাজারেই অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোয় পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
চীনের সঙ্গে জড়িত অর্ডারও হুমকিতে
অনেক চীনা প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারে পোশাক উৎপাদনের জন্য অর্ডার দেয় এবং পরে ওই পণ্য চীন থেকেই রপ্তানি করে। ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপে এসব অর্ডার হয়তো মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম বা লাওসের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তর হয়ে যেতে পারে, যেখানে শুল্কহার তুলনামূলক কম।
মিয়ানমারের পোশাক উৎপাদনও অনেকাংশে চীনা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। এর ফলে চীনের ওপরও যদি যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্কনীতি চলমান থাকে, তাহলে তা মিয়ানমারের উৎপাদন খরচ আরও বাড়িয়ে তুলবে।
দেশটির একজন পোশাক কারখানার মালিক বলেন, এটি শুধু অর্থনৈতিক ধাক্কাই নয়, বরং আরও অনেক পরোক্ষ সমস্যা তৈরি করতে পারে।
জান্তা সরকারের প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি না পেলেও মিয়ানমারের সেনা সরকার প্রধান মিন অং হ্লাইং ট্রাম্পের শুল্ক চিঠিকে ‘সম্মানের বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি ট্রাম্পকে ‘পারস্পরিক সুবিধার প্রস্তাব’ দিয়েছেন। জান্তা প্রধান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি মিয়ানমারের ওপর শুল্ক ১০-২০ শতাংশে নামিয়ে আনে, তবে মিয়ানমারও মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ০-১০ শতাংশে কমিয়ে দিতে প্রস্তুত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারের অর্থনীতি বর্তমানে চরম দুর্বল অবস্থায় রয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই শুল্কনীতি পোশাক শিল্পের ভরকেন্দ্রকে অন্য দেশে সরিয়ে নিতে পারে, যার ফলে হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে।
আজকালের খবর/ এমকে