মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: রাইসা এখন শুধুই একটি কবরের নাম
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
ঢাকা উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাইসা মনির (৯) জানাজা ফরিদপুরের গ্রামের বাড়িতে সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সোয়া ৯টার দিকে জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া দক্ষিণপাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে বাজড়া শামসুল উলুম মাদরাসা ও এতিমখানা গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। জানাজায় আলফাডাঙ্গার ইউএনও রাসেল ইকবাল, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। 

বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের পর থেকে নিখোঁজ ছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাইসা মনি (৯)। দুর্ঘটনার পর থেকে রাইসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। 

অবশেষে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটির মুখমণ্ডলের অংশবিশেষ দেখে রাইসা হিসেবে দাবি করেন বাবা শাহাবুল শেখ (৪৪)। বাবার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিএমএইচ থেকে মঙ্গলবার বিকেলে লাশের ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ডিএনএ রিপোর্টে রাইসার মরদেহ শনাক্ত হলে গতকাল বৃহস্পতিবার  রাত ১১টার দিকে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। রাতেই কফিনে করে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আজ শুক্রবার সকালে রাইসার মরদেহ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামে পৌচ্ছালে শোকে আশপাশের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। সকাল থেকেই নিহত রাইসার বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও গ্রামবাসীর কান্না এবং মাতম চলছে।  
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাইসা মনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামের শাহাবুল শেখ ও মীম আক্তারের মেয়ে। পরিবার পরিজন নিয়ে রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ ঢাকার উত্তরা নয়ানগরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। শাহাবুল একটি গার্মেন্টস এক্সেসরিস প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। 

রাইসা মণিরা দুই বোন ও এক ভাই। বোনের মধ্যে রাইসা মেজো। সে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বড় বোন সিনথিয়া (১৪) একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ভাই রাফসান (৪) সবার ছোট। রাইসা মনির বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে-মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়ানোর। উচ্চশিক্ষায় সু-শিক্ষিত করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তাকে ভর্তি করেন।  

রাইসার চাচা ইমদাদুল শেখ বলেন, এ দুর্ঘটনার পর থেকে রাইসা নিখোঁজ ছিল। আমরা তাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বিভিন্ন স্থানে ও হাসপাতালে খোঁজখবরের পর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে তার লাশের সন্ধান পাই। তার বাবা পুড়ে যাওয়া মুখমণ্ডল দেখে নিখোঁজ মেয়ে রাইসার বাবা শনাক্ত করেন। গত রাতে বাড়িতে এসেছি। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় জানাজা সম্পন্ন করে স্থানীয় কবরস্থানে মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। 

গোপালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, রাইসা মনির অকাল মৃত্যুতে পুরো এলাকার মানুষ শোকে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে। এমন কোন মানুষ নেই যে মেয়েটির জন্য কাঁদেনি। 

জানাজায় উপস্থিত আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী রাসেল ইকবাল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় রাইসা মনি মারা যায়। এ শোক সয়বার মতো না। আল্লাহ পাক যেন তার বাবা-মাকে মেয়ের শোকে ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দেন। আমরা উপজেলা প্রশাসন রাইসা মনির পরিবারের পাশে আছি। আমরা সবাই তার জন্য দোয়া করব।

আজকালের খবর/ এমকে








http://ajkalerkhobor.net/ad/1751440178.gif
সর্বশেষ সংবাদ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্মটা এখন বৈষম্য সৃষ্টির প্লাটফর্ম
৫ আগস্টের আগেও জুলাই ঘোষণাপত্র হতে পারে: মাহফুজ আলম
দেশে দুই মাসে নির্যাতনের শিকার ৪৩৮ নারী ও কন্যাশিশু
রোহিঙ্গা মুসলিমদের দমন-পীড়ন করছে আরাকান আর্মি: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
সাধারণ যাত্রীর মতো লন্ডনে বাসের অপেক্ষায় তারেক রহমান
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
বরিশালের গৌরনদীতে নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন যুবদল নেতা সরদার মোহাম্মদ
কাপাসিয়ায় শাপলা দেখতে গিয়ে নৌকাডুবে দুই বন্ধুর মৃত্যু
আওয়ামী ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া কে এই মেজর সাদিক?
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ
টেকনাফে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবা উদ্ধার
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft