প্রকাশ: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:৫৯ PM
মাসিক সচিত্র সুতরাং এর সম্পাদক ও দৈনিক বাংলাদেশের আলোর বিশেষ প্রতিনিধি আকাশ মাহমুদ (৫২) দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। পেপটিক আলসার, নিউমোনিয়া ও মাল্টিপুল ফিস্টুলাসহ একাধিক অপারেশনযোগ্য অসুখে আক্রান্ত হয়ে তাকে মাসের অধিকাংশ সময় বিছানায় শয্যাশায়ী থাকতে হচ্ছে। অসুস্থতার কারণে তার সম্পাদিত সচিত্র সুতরাং পত্রিকাটির নিয়মিত প্রকাশনা ব্যাহত হচ্ছে। সময়মতো বাংলাদেশের আলোতে পেশাগত দায়িত্বও পালন করতেও পারছেন না।
রাজধানীর ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জেনারেল ল্যাপারোস্কপিক ও কোলরেক্টাল সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. মহিবুল আজিজ, ইবনে সিনা স্পেশালাইজড হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিশেষজ্ঞ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল কবীর এবং কার্ডিওলজিস্ট ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কর্ণেল (অব.) অধ্যাপক ডা. জেহাদ খানের অধিনে কয়েক বছর যাবত তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে পর্যাপ্ত অর্থাভাবে অতীব জরুরি তিনটি জটিল অপারেশন করাতে সমর্থন হননি।
দীর্ঘসূত্রতার কারণে রোগের জটিলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে অন্যান্য উপসর্গও দ্রুততার সাথে শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অভিমত। সময়ক্ষেপণ না করে অপারেশন সম্পন্নের জন্য ব্যবস্থাপত্রে জোর পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণ। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও হাসপাতালের আবাসিক সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং ফিস্টুলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. চার্লস বিহ শিউ টিসান ঢাকায় এলে আকাশ মাহমুদ তার সাথে ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখা করেন। আগের চিকিৎসাপত্র দেখে ডা. টিসান আকাশ মাহমুদকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন।
সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও হাসপাতালে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ফিস্টুলা অপারেশনের জন্য তিন ধাপে ৫৬ হাজার মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে। চিকিৎসাকর্মে দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে অসুস্থ সাংবাদিক ও সম্পাদককে প্রশ্ন করা হলে প্রতুত্তরে তিনি কাতর কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘ দুই দশক ধরে দেশ-জাতি-সমাজ ও সমৃদ্ধির পক্ষে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করে আমি পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত রেখেছি। পেশাদারিত্ব বজায় রেখে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে করতে নিজেই এখন ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছি। জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার জীবন প্রদীপ এখন নিভূ নিভূ অবস্থায় পৌঁছে গেছে। একাধিক রোগের কারণে আমি ধীরে ধীরে অচলাবস্থার দিকে নিপতিত।
তিনি আরো বলেন, বাজারে আমাদের পত্রিকার অনেক টাকা পাওনা। বকেয়া বিল আদায় করতে না পারায় একদিকে পত্রিকার প্রকাশনা ব্যাহত হচ্ছে অন্যদিকে আমি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি দিনদিন। পর্যাপ্ত অর্থাভাবে জরুরি তিনটি অপারেশনে যেতে পারছি না।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অসুস্থতার জন্য বিজ্ঞাপন বিল আদায়ে নিয়মিত যোগাযোগও করতে পারছি না। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে গেলেও তারা বিজ্ঞাপন বিল পরিশোধে সময়ক্ষেপন করে যাচ্ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আমার এই জীবন-মরণ সমস্যা বিবেচনায় পাওনা টাকা প্রদানে আমাদের বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট ও শুভানুধ্যায়ীরা সহৃদয়তার সঙ্গে এগিয়ে আসবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।
উল্লেখ্য, আকাশ মাহমুদ ও তার সহধর্মিণী মোছা.শারমিন সুলতানা দুজনেই ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সদস্য এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সমাজসেবায় নিবেদিতপ্রাণ। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী আকাশ মাহমুদ সাহসী সাংবাদিকতায় একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব।
আজকালের খবর/ওআর