প্রকাশ: সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৪৩ এএম				
				
			 
					
আজ ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস।  বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর দিন।  ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে 
সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২২ আগস্ট খন্দকার মোশতাকের সরকার এ চার জাতীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়।  একই বছরের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে কারাগারের অভ্যন্তরে তাদের গুলি
 করে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর মুজিবনগর সরকারের এই চার নেতার 
হত্যাকাণ্ড জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস ও পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যার অন্যতম
 দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।  জাতি দিনটি পালন করে জেলহত্যা দিবস হিসেবে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের ‘বাংলাদেশ আ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ গ্রন্থে চার নেতার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়।
জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরদিন লালবাগ থানায় একটি মামলা হয়। এতে বাদী হন তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল। তদন্ত শেষে সিআইডি ১৯৯৮ সালের ২০ অক্টোবর ২০ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন৷। এরপর ছয় বছরের বেশি সময় ধরে চলে বিচারকাজ।
জেলহত্যার ২৯ বছর পর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও এলডি (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদসহ ১২ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। খালাস পান সাবেক কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহের উদ্দিন ঠাকুর।
জেলহত্যা দিবসের প্রতি বছর এই দিনে জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে সেই চার নেতাকে, যারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রগঠনে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে নিবেদিত সহযাত্রী ছিলেন। 
আজকালের খবর/ এমকে