পেট ফুলে যাওয়া, অ্যাসিডিটি, ধীর হজম এবং অনিয়মিত মলত্যাগের মতো সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। এই সমস্যা দূর করার জন্য আপনার খাদ্যাভ্যাস, হাইড্রেশন এবং দৈনন্দিন রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। হজম ভালো হলে তার প্রভাব পড়ে আমাদের পুরো শরীরে। তখন সুস্থ থাকা এবং যেকোনো কাজে মনোযোগ দেওয়া অনেক সহজ হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, পেট ভালো রাখতে কোন কাজগুলো করতে হবে-
১. হালকা ডিটক্স পানীয় দিয়ে দিন শুরু করুনলেবু, আদা বা জিরা মিশ্রিত হালকা গরম পানি দিয়ে আপনার সকাল শুরু করুন। এই সহজ উপাদানগুলো হজমকে উদ্দীপিত করে, জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং লিভারের কার্যকারিতা সহজ করে। বাড়িতে তৈরি পানীয়টি আপনার শরীরকে হাইড্রেট এবং প্রাকৃতিকভাবে পেটকে প্রশান্ত করবে। খালি পেটে এটি পান করলে সারাদিন হজমশক্তি ভালো থাকবে।
২. প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খান২০২২ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের জন্য প্রোবায়োটিক গুরুত্বপূর্ণ। আপনার খাদ্যতালিকায় দই, বাটারমিল্ক, ইডলি, গাঁজানো ভাত, অথবা ঘরে তৈরি আচার যোগ করুন। এই খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, পেট ফাঁপা কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। ধারাবাহিকভাবে প্রোবায়োটিক গ্রহণ করলে তা পুষ্টির শোষণ উন্নত করতে পারে এবং অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. ধীরে ধীরে চিনি এবং ক্যাফেইন কমিয়ে দিনচা, কফি এবং মিষ্টির অতিরিক্ত ব্যবহার পরিপাকতন্ত্রকে জ্বালাতন এবং অ্যাসিডিটি তৈরি করতে পারে। চিনি এবং ক্যাফেইন গ্রহণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনলে হঠাৎ করে খাবারের লোভ রোধ হয় এবং অন্ত্রকে স্থিতিশীল রাখা সহজ হয়। মৌরি, ক্যামোমাইল বা আদা চা এর মতো ভেষজ ইনফিউশন এক কাপ চা বা কফির পরিবর্তে ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো কেবল হজম প্রশমিত করে না বরং প্রদাহ এবং পানি ধরে রাখার ক্ষমতাও কমায়। খাবারের পরের মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন। খুব বেশি মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে কোনো ফল যেমন খেজুর, স্ট্রবেরি ইত্যাদি খেতে পারেন।
৪. হালকা, আঁশযুক্ত খাবারকে অগ্রাধিকার দিন
হালকা খাবারের দিকে মনোযোগ দিয়ে আপনার পাচনতন্ত্রকে বিশ্রাম দিন। শাক-সবজি, ডাল, স্যুপ বা খিচুড়ি জাতীয় খাবার হজম করা সহজ এবং পেট ফুলে যাওয়া রোধ করে। অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পেট ফুলে যাওয়া রোধ করতে পরিমিত পরিমাণে ওটস, স্প্রাউট বা সাবুদানার মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে, অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে।
৫. খাবারের সময় ঠিক রাখুনঅনিয়মিত খাবারের সময় হজম এবং বিপাকীয় ছন্দকে ব্যাহত করতে পারে। নিয়মিত বিরতিতে খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং ঘুমানোর কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। একটি সময়সূচী মেনে খাবার খেলে শরীর দক্ষতার সঙ্গে খাবার প্রক্রিয়া করতে পারে এবং খাবারের পর পেট ফুলে যাওয়া কমায়।
আজকালের খবর/ এমকে