
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা শহরে শক্তিশালী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩২ জন।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কোয়েটায় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধাসামরিক বাহিনী-এফসি সদর দফতরের কাছে এক ব্যস্ত সড়কে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ঘটনাটির নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনার জন্য ‘ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি কোয়েটায় সংঘটিত আত্মঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, যা ‘ফিতনা-আল-খারিজ’—ভারতের ইশারায় পরিচালিত পথভ্রষ্ট উগ্রপন্থিরা— ঘটিয়েছে।
‘ফিতনা-আল-খারিজ’ শব্দটি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সন্ত্রাসীদের বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ফিতনা-আল-খারিজ ও ভারতের স্বার্থে কাজ করা উপাদানগুলো পাকিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করতে পারবে না। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন, যা সন্ত্রাসীদের নীলনকশা ভন্ডুল করে দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আহত এফসি সদস্যদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন এবং মাতৃভূমি রক্ষায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাহস ও দৃঢ় সংকল্পের প্রশংসা করেছেন।
ডন ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেলুচিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বখত মোহাম্মদ কাকার মৃত্যুর সংখ্যা ও আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিস্ফোরণে ১০ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছে। আহতদের সিভিল হাসপাতাল এবং ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
কোয়েটার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) স্পেশাল অপারেশনস মুহাম্মদ বালোচ জানান, মডেল টাউন থেকে হালি রোডের দিকে মোড় নেওয়ার সময় বিস্ফোরকবাহী একটি গাড়ি এফসি সদর দফতরের কাছে বিস্ফোরিত হয়।
টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফুটেজে দেখা গেছে, কীভাবে শক্তিশালী বিস্ফোরণে মুহূর্তেই কেঁপে ওঠে ওই সড়ক।
বিস্ফোরণের পর বেলুচিস্তান স্বাস্থ্য বিভাগ প্রাদেশিক রাজধানীর সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করে। স্বাস্থ্য সচিব মুজিবুর রহমান বলেন, কোয়েটা সিভিল হাসপাতাল, বেলুচিস্তান মেডিক্যাল কলেজ (বিএমসি) হাসপাতাল এবং ট্রমা সেন্টারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সব কনসালট্যান্ট, চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, স্টাফ নার্স এবং প্যারামেডিক কর্মীদের হাসপাতালে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগটি ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানান।
আজকালের খবর/ওআর