প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:৩৩ পিএম
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান অভিনীত বাংলাদেশ-ইরান যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘ফেরেশতে’ অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে বড় পর্দায়। দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পর আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে ছবিটি।
এর আগে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) মুক্তির কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এক সপ্তাহ পেছানো হয়েছে। হল সংক্রান্ত জটিলতাই ছবিটির মুক্তির তারিখ পিছিয়েছে। তা ছাড়া সামনে শুরু হবে পূজার আমেজ। সেই উৎসবে দর্শকরা ছবিটি উপভোগ করতে পারবেন।
তিন বছর ধরে ‘ফেরেশতে’ নিয়ে দর্শক ও সংবাদকর্মীদের নিয়মিত প্রশ্ন শুনতে হতো জয়াকে— ‘কবে মুক্তি পাবে ছবিটি?’ মুক্তির তারিখ ঘোষণার পর এবার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
বর্তমানে কলকাতায় অবস্থান করছেন জয়া আহসান। গত ৭ সেপ্টেম্বর তিনি সেখানে উড়াল দেন। সম্প্রতি এডভেন্ট এক্টর স্টুডিও প্রাইভেট লিমিটেড আয়োজিত গ্লোবাল ইনফ্লুয়েঞ্জার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। ব্যক্তিগত কিছু কাজও সেরে এই সপ্তাহেই ঢাকায় ফিরবেন। দেশে ফিরে নতুন সিনেমার প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন এই তারকা।
ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম পরিচালিত ‘ফেরেশতে’ সমাজের প্রান্তিক মানুষের জীবনের গল্প। নির্মাতা রিয়েল লোকেশনে শুটিং করে সিনেমাটিকে বাস্তবসম্মত করার চেষ্টা করেছেন। এই কাজকে জয়া বলেছেন ভীষণ চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা। তার ভাষায়— ‘আমাদের দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভেতরে যে সংগ্রামী ও সাহসী চরিত্র রয়েছে, তাদেরই একজনের ভূমিকায় আমি অভিনয় করেছি। পুরো টিম সহযোগিতা করায় কঠিন শুটিং সুষ্ঠুভাবে শেষ করা সম্ভব হয়েছে।’
নির্মাণের পর থেকেই ছবিটি ঘুরে বেড়িয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে। ইরানের মর্যাদাপূর্ণ ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে মানবিক বার্তার জন্য ছবিটি জিতেছে জাতীয় পুরস্কার। এ ছাড়া ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৪-এর উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবেও প্রদর্শিত হয়েছিল ‘ফেরেশতে’। ভারতের গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও হয়েছে প্রশংসিত। বিদেশি চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হাততালি কুড়ানোর পর এবার দেশের দর্শকের সামনে হাজির হচ্ছে সিনেমাটি।
ছবির মূল অভিনেতা ও প্রযোজক সুমন ফারুক বলেন, আমরা যেমন বিদেশি সিনেমা দেখে তাদের সংস্কৃতি জানতে পারি, তেমনি ‘ফেরেশতে’ আমাদের সমাজ-সংস্কৃতির গল্প তুলে ধরেছে। প্রান্তিক মানুষের যে গল্প উচ্চবিত্ত সমাজ সহজে ভাবে না, সেই গল্প বলেছে সিনেমাটি। বিদেশে প্রচুর প্রশংসা পেয়েছি, এবার আমাদের দেশের দর্শকরা হাততালি দেবেন বলে আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, সিনেমাটি মানবিক মূল্যবোধ ও অনুভূতির মিশেলে তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে নির্মাতা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। আশা করি দেশীয় দর্শকও ছবিটিকে আপন করে নেবেন।
জয়া আহসান ও সুমন ফারুক ছাড়াও সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহেদ আলী, রিকিতা নন্দিনী শিমু, শাহীন মৃধা এবং শিশুশিল্পী সাথী।
প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন সুমন ফারুক, আর সহ-প্রযোজক হিসেবে যুক্ত ছিলেন জয়া আহসান নিজেও।
ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন বাংলাদেশের মুমিত আল-রশিদ, যিনি ফারসি ও বাংলার অনুবাদেও কাজ করেছেন ফয়সাল ইফরানের সঙ্গে।
বাংলাদেশে ইতোমধ্যে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেছেন জয়া আহসান। অনেক চলচ্চিত্রপ্রেমী মনে করছেন, ‘ফেরেশতে’-তে তাঁর অনবদ্য অভিনয় হয়তো আরও একবার এনে দিতে পারে জাতীয় পুরস্কারের স্বীকৃতি।
সব মিলিয়ে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত ‘ফেরেশতে’ এবার বাংলাদেশি দর্শকের মন জয় করতে প্রস্তুত। এখন দেখার বিষয়, এই সিনেমা দেশীয় প্রেক্ষাগৃহে কতটা সাড়া জাগায়।
আজকালের খবর/আরইউ