
ছাত্রদল নেতা কর্তৃক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ‘যৌনকর্মী’ বলে কটূক্তি, সারাদেশে নারী হেনস্তা এবং ক্যাম্পাসগুলোতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। এ সময় ‘ধর্ষক আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার’ বলে স্লোগান দেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধনে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর; ধর্ষক আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার; জবাই স্লোগান দিত যারা, তারা এখন বাংলাছাড়া; ছাত্রদলের সন্ত্রাস, রুখে দাও ছাত্রসমাজ; দায় চাপানো রাজনীতি, বন্ধ করো, করতে হবে; ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; চাঁদাবাজদের ঠিকানা, এই বাঙলায় হবে না; নারী হেনস্তা বন্ধ করো, করতে হবে; শিবিরের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী, অর্থ সম্পাদক শেখ আল আমিন, ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া হোসেন ও আন্তর্জাতিক ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সম্পাদক হাসানুল বান্না আলি-সহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শাখা ছাত্রশিবিরের ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া বলেন, ‘৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে নতুন বাংলাদেশে ছাত্রদল গণধর্ষণের মহোৎসব পালন করছেন, ক্যাম্পাসগুলোকে তারা যেভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানো-সহ এমন কোনো কর্মকাণ্ড নেই যা তারা করেনি। আমরা আশা করেছিলাম একটা সুন্দর বাংলাদেশ পাবো, যে বাংলাদেশে আমাদের মা-বোন, মেয়ে-সহ বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নারী নিরাপদ থাকবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে ধর্ষণের যে মহোৎসব পালন করেছিল ছাত্রলীগ তারই স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ছাত্রদল। আমরা দেখতে পেয়েছি যে জুলাই শহীদের মেয়েকেও ছাত্রদলের নেতাকর্মী দ্বারা ধর্ষিত হতে হয়েছে। ধর্ষিতা হওয়ার পর বিচার না পেয়ে সেই জুলাই যোদ্ধার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ যাদের রক্তের উপর দিয়ে এসেছে তাদের সাথেই যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে অন্যান্য মানুষের সাথে কীরকম ঘটবে?’
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশেকে ছাত্রদল তাদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করছে। রাবিতে এক ছাত্রদল নেতা ৯১ জন ছাত্রীদের ‘যৌনকর্মী’ এবং ঢাবির এক নেত্রী ছাত্রীকে ‘সেবাদাসী’ বলে কটূক্তি করেছে। চবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বিএনপির নেতা হামলার জন্য উস্কে দিয়েছে। ঢাবির আলী হাসান ছাত্রশিবিরের ন্যূনতম সম্পৃক্ত ছিল না, কিন্তু সে তার প্রোফাইলে ছাত্রদলের প্রতি মায়া দেখিয়ে পোস্ট করেছিল; তা প্রমাণ করে সে ছাত্রদলের সাথেই সম্পৃক্ত। অথচ আমরা প্রশাসন বরাবর তার শাস্তির দাবি জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদল আদর্শিক রাজনীতি ছেড়ে পেশিশক্তির রাজনীতি বেছে নিয়েছে। তাদের অফিশিয়াল পেইজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় “একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর” বলে ছাত্রলীগের মতো সন্ত্রাসী স্লোগান দিয়েছে। তারা ৯০-এর সন্ত্রাসী রাজনীতে ফিরে যেতে চায়। এরকম নোংরামি রাজনীতি করতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদেরকে লাল কার্ড দেখাবে। আমরা এমন ক্যাম্পাস চাই যেখানে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে থাকবে এবং পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকবে।’
আজকালের খবর/ওআর