গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (গাসিক) বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে চার্জশিট পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন তিনি । তবে ইব্রাহিম খলিল শুরু থেকেই এই মামলাটিকে একতরফা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে আসছেন বলেও তিনি জানান। তার ভাষ্যমতে, এটি পরিকল্পিত। প্রকৌশলী খলিল ও তার পরিবারের নামে প্রায় ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে খলিলের স্পষ্ট বক্তব্য, এই সম্পদ আমার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া, জমি অধিগ্রহণ বাবদ পাওয়া ক্ষতিপূরণ এবং বৈধভাবে অর্জিত উপার্জন থেকে করা। আমার প্রতিটি টাকার হিসাব আমার আয়কর নথিতে ও প্রমাণপত্রে রয়েছে। ইব্রাহিম খলিল বলেন, দুদক মামলা করেছে। এতে আবার কোন আপত্তি নাই। আমি আইনি প্রক্রিয়া আগাচ্ছি। আইনই সেটা প্রমাণ করবেন আমি দুষি, না নির্দোষি।
তিনি বলেন, তার দীর্ঘদিনের সততা, পেশাগত সাফল্য এবং সামাজিক অবস্থানকে নষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন তার সমাজের কয়েকজন ব্যক্তি।
প্রকৌশলী ইব্রাহিম বলেন, আইনকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু কোনো তদন্ত যেন রাজনৈতিক প্রভাব বা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বলি না হয়, সেটিও নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
ইব্রাহিম খলিল বলেন, এই মামলা আমার পরিবার, পেশাগত জীবন এবং সামাজিক মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত করেছে। যাহোক, তারপরও আমি আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল।
ইব্রাহিম দৃঢ়ভাবে বলেন, তার পরিবার নির্দোষ। তারা কোনো অবৈধ সম্পদ অর্জন করেনি। একদিন আইন কিংবা মহান আল্লাহর আদালতে এর ন্যায্য বিচার হবে।
তিনি বলেন, আমি ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করি। আইনি প্রক্রিয়ায় আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবো ইনশাআল্লাহ।
প্রকৌশলী খলিল সমাজ, গণমাধ্যম এবং শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা যেন সত্যটাকে যাচাই করেন, নথিপত্র ও বাস্তবতা বিবেচনায় নেন। আমি চাই, দেশে একজন সৎ, পরিশ্রমী ও যোগ্য কর্মকর্তাকে যেন অন্যায়ভাবে বলির পাঁঠা না বানানো হয়।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে ইব্রাহিম খলিল ও মেয়ের নামে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার সম্পদ কেনা হয়। এই তথ্য ওই সরকারি কর্মচারীর আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ নেই বলে জানতে পারে দুদক।
সংস্থাটির তদন্তে উঠে আসে, প্রকৌশলী খলিলের ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন সংঘঠিত হয়েছে। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও ২৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ধারণের তথ্যও রয়েছে দুদকের কাছে।দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ২০২৩ সালের ২৫ জুন প্রকৌশলী ইব্রাহিম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে গাজীপুরে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২০০০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ের তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়।
এ বিষয়ে দুদকের মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোজাম্মেল হক জানান, আমরা আইনিভাবে ইব্রাহিম খলিলের মামলাটি মোকাবিলা করছি। এ বিষয়ে চার্জশিটের কার্যক্রম শেষ হলে সব স্পষ্ট হবে।
ইব্রাহিম খলিল বলেন, তার সকল বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। এই মামলা আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন।
আজকালের খবর/ এমকে