
জুলাই-আগষ্ট ছাত্র-গণঅভ্যূত্থানের এক বছরের মাথায় মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিভ্রান্তির কারণে এই হতাশা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই গণআন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী কেউ কেউ।
জুলাই গণঅভ্যূত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-গণ আন্দোলনে দেশে বিদেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এবং শামসুল আলম লিটন।
তারা বলেন, যে আকাঙক্ষা নিয়ে ছাত্রদের নেতৃত্বে সর্বস্তরের মানুষ এক বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল সেই স্বপ্ন পূরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনে ছাত্ররা আবার রাস্তায় নামবে। তারা এখনও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত আছে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন- ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ ক্যাম্পাসের ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এর ডিন অধ্যাপক ড. গোলাম আহমেদ ফারুকী, ফ্যাকাল্টি অব সোশ্যাল সায়েন্স এন্ড লিবারেল আটর্স এর ডিন অধ্যাপক ড. বিজয় প্রসাদ বড়–য়া, শিক্ষার্থী আহনাফ ফাতেহ হোসেন ও মাসফিয়া রহমান রুহি। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইউনিভার্সিটির প্রোভোস্ট চ্যান জো জিম।
আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই গণঅভ্যূত্থান ও সম্প্রতি ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনায় শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, তরুণরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে ঘরে ফিরে গেলেও যারা তাদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা সেই দায়িত্ব কতটা পালন করতে পেরেছে সেটা আজ বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়নি, দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট, সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। এই লক্ষ্যপূরণ না হলে ছাত্ররা আবার মাঠে নামবে বলে মনে করেন তিনি।
শামসুল আলম লিটন বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে শিখেছে। গণতন্ত্র, সমতা, ন্যায্যতা, সম্মান ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে তারা আবার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
অধ্যাপক ড. গোলাম আহমেদ ফারুকী বলেন, বাংলাদেশ এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেটা পরিবর্তনের পথে শুরু মাত্র। আরও অনেক পথ যেতে হবে। কবে, কতদিনে এবং কিভাবে সেই পথ পাড়ি দেবে সেটাই দেখার অপেক্ষা।
অধ্যাপক বিজয় প্রসাদ বড়–য়া বলেন, নৈতিকতা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া বড় লক্ষ্য অর্জন করা যায় না। ছাত্র সমাজের লক্ষ্য অর্জনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। অতিথি আলোচক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
ইউনিভার্সিটির প্রভোষ্ট চ্যান জো জিম বলেন, জুলাই আন্দোলনের স্বপ্ন ও এই দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বিশ্বাস হারালে চলবে না। আন্দোলনের ত্যাগ ভুলে না গিয়ে সবাইকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে জাতি গঠনে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
আলোচনা সভা শেষে চব্বিশের জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যূত্থানের ওপর চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
আজকালের খবর/বিএস