প্রকাশ: রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ১:৩১ পিএম

দর্শনা কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে বাংলা মদ বোতলজাত করতে সক্ষম হয়েছে। যার কারণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোষাগারে ১৪১ কোটি টাকা রাজস্ব দেবার পাশাপাশি ১২০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করতে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র রাষ্ট্রায়াত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনার কেরু এ্যান্ড কোম্পানি চিনি কারখানা, জৈব সার কারখানা, বাণিজ্যিক খামার ও ডিষ্টিলারী বিভাগ নিয়ে গঠিত। আখের অভাবে চিনি উৎপাদন বিভাগে কিছুটা লোকশান হলেও বাকী বিভাগগুলো লাভ করেছে।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানির চিনি কলটি বাণিজ্যিক খামার, চিনি কারখানা, জৈব সার কারখানা ও ডিষ্টিলারী নিয়ে গঠিত। চাহিদা মোতাবেক আখ উৎপাদন না হওয়ায় চিনি উৎপাদনে কিছুটা লোকশান হয়ে থাকে। বাকী ইউনিটগুলো লাভ করে আসছে। কোম্পানির প্রধান পণ্য চিনি হলেও আখ থেকে চিনি নিষ্কাশন করার পর চিটাগুড় থেকে অন্যান্য উপকরণও (বাই-প্রোডাক্ট) দিয়ে মদ, ভিনেগার, স্প্রিট এবং জৈব সার তৈরি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি কান্ট্রি স্প্রিট, ফরেন লিকার, ডিনেচার স্প্রিট এবং রেক্টিফাইট স্প্রিট উৎপাদন করে থাকে। পাশাপাশি মল্ট ভিনেগার এবং সাদা ভিনেগারও তৈরি করে। কেরুর কারখানাগুলোর সম্মিলিত বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১.৩৫ কোটি প্রুপ লিটার। কেরু কোম্পানির ডিস্টিলারি ইউনিট তৈরি করে থাকেন ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্রান্ডি, চেরি ব্রাান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, রোসা রাম, ওল্ড রাম এবং জারিনা ভদকা। যা দেশের বাজারে এর চাহিদা রয়েছে।
এদিকে ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি গত ২২ মে প্রথমবারের মতো দেশি মদ নামে খ্যাত কান্ট্রি স্প্রিট বোতলজাত করে বিপনন শুরু করে। এতে করে একটি মহল চক্রান্ত শুরু করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সকল প্রকার ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আইনি প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে বাংলা মদ ড্রামের পরিবর্তে বোতলজাত শুরু করে। রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন এর সুপারিশক্রমে শিল্প উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদনক্রমে বোটলিং কার্যক্রম চালু হলেও অভিযোগ রয়েছে, কয়েক মাস আগে বর্তমান প্রশাসন কান্ট্রি স্প্রিট প্লাস্টিক বোতলে ভরে বিক্রির উদ্যোগ নিলে পরিবেশ অধিদপ্তর বাধসাধে। কিন্তু সিদ্ধান্তে অটল থাকা প্রশাসন। সেসব বাধা অতিক্রম করে গত ২২ মে পার্বতীপুর ওয়ার হাউজে প্রথম চালান পরে পর্যায়ক্রমে সকল পণ্যাগারে পূর্বের ড্রাম পদ্ধতির পরিবর্তে বোতলজাত করে সরবরাহ শুরু করে। এছাড়া ফরেন লিকার বাজারে চাহিদার প্রেক্ষিতে বিক্রয়ের তারতম্য হলেও মুনাফা বেশি হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ডিস্টিলারীতে রিকোভারী বৃদ্ধি, ভিনেগারের বিক্রয় বৃদ্ধি, চিনির রিকোভারী বৃদ্ধি, জৈব সারের উৎপাদন বৃদ্ধি, আখের রোপন বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, কেরুজ চিনিকল সম্পর্কে আমার কোন ধারনা নেই। অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়েছি আগে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জেনে নেই। তারপর এসব বিষয়ে কথা বলা যাবে।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, ভালো কিছু করতে গেলে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি এটা মূল্যায়ন করবে কর্তৃপক্ষ। সঠিকটা না জেনে কোন বিষয়ে বা কারো সম্পর্কে মন্তব্য করা ঠিক না। আমি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিরোধী কোন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোন ভাবেই জড়িত না। প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
আজকালের খবর/বিএস