
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ ডিঙ্গাপোতা হাওরের জনদপুরে দ্রুত এগিয়ে চলছে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট (এটিআই) নির্মাণ কাজ।
ইতিমধ্যে প্রকল্প নির্মাণ কাজের ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. কে এম বদরুল হক জানান। প্রকল্প এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ, মাটি ভরাট, প্রকল্পের নকশা প্রাক্কলন, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ, প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনসহ নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। জানা গেছে, অবহেলিত মোহনগঞ্জ হাওর এলাকায় কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসার ঘটাতে বিগত সরকারের আমলে মোহনগঞ্জে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট (এটিআই) স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
পরে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়। বিগত ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর ওই প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দ্যা ইউনাইটেড কনস্ট্রাকশন কোম্পানী লিমিটেড এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যাদেশ পায়। সূত্র জানায়, উপজেলার ৬নং সুয়াইর ইউনিয়নের ডিঙ্গাপোতা হাওরের জনদপুর মৌজার ১৪ দশমিক ৯৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে মাটি ভরাট করা হয়।
এতে ভূমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট কাজে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তাছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের আওতায় প্রাক্কলন নকশা ও ভবন নির্মাণসহ ৩টি প্যাকেজে (রেসিডেন্সিয়াল খাতে ৬০ কোটি, এনসিলারি খাতে ৬১ কোটি ও একাডেমিক খাতে ৩১ কোটি টাকা) ১শ ৫২ কোটি টাকার কাজ শুরু করা হয়। ওই প্রকল্পে ১৪ দশমিক ৯৫ একর অধিগ্রহণ করা ভূমিতে চার তলা প্রশাসনিক কাম একাডেমিক ভবন নির্মাণ, তিন তলা ৬টি কৃষক ডরমেটরি ভবন, কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন, কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, ডুপ্লেক্স ১টি, অতিথিশালা, অধ্যক্ষের বাসভবন, মসজিদ নির্মাণ, একটি ছাত্রী নিবাস ও একটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও ওই কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের জন্য ৩৭টি কম্পিউটার, ৯টি ল্যাপটপ, ১৯টি স্ক্যানার, ৫টি মাল্টিমিডিয়া ও ৮টি ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে বোর্ড ক্রয় করা হবে। মঙ্গলবার সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, হাওরের কৃষি ব্যবস্থার নবজাগরণ আনতে একটি বড় পদক্ষেপ সরকারের।
এটি হাওরের কৃষি ও অর্থনীতি দুদিকেই আশার স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। দেশের কৃষি উন্নয়নে চার বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা কোর্সের আওতায় ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং কৃষিতে খামার যান্ত্রিকীকরণে উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। সুয়াইর ইউনিয়নের জনদপুর গ্রামের পয়ষট্টি বয়সী কৃষক আঙ্গুর মিয়া জানান, কৃষকের জন্য তৈরি হওয়া এ ইনষ্টিটিউট দ্রুত হলে আমাদের উপকার হবে।
নির্মানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও প্রকৌশলী খালেদ মোশারফ জানান, প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আরও দ্রুত করা যেত, এলাকায় শ্রমিক সংকটের কারণে কাজে একটু ধীরগতি রয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. কে এম বদরুল হক জানান, আগামী বছর জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
উপজেলার সুয়াইর ইউনিয়নের আদর্শনগরে নির্মানাধীন কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের কাজ বাস্তবায়ন হলে হাওরের কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
আজকালের খবর/ এমকে