
গাজীপুরের শিমুলতলী আর্মি ফার্মা মাঠে চলছে কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা-যেখানে শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও উৎসবের আবহে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো দর্শনার্থী। স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় তৈরি হয়েছে এক প্রাণবন্ত অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ।
তবে সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘বিতর্কিত’ সংবাদে মেলাকে নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন আয়োজক ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে মেলার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে মিথ্যা ও ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে।
মাসব্যাপী এ মেলায় অংশ নিয়েছে শতাধিক স্টল, যেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে দেশীয় কুটির শিল্পের পণ্য, জামা-কাপড়, গৃহসজ্জা সামগ্রী, অলংকার, খেলনা ও স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত করা নানা খাবার।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল করিম জানান, এই মেলা আমাদের জন্য বড় সুযোগ। বিক্রি ভালো হচ্ছে, আর এলাকায় মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে।
দর্শনার্থী শ্রাবণী বলেন, এখানকার পণ্য মানসম্মত ও দামও হাতের নাগালে। পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে ভালো লাগছে।
সন্ধ্যা নামলে রঙিন আলোকসজ্জায় মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে দৃষ্টিনন্দন। শিশুদের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, মিনি ট্রেন ও বাউন্সারসহ নানা বিনোদন ব্যবস্থা। পুরো এলাকাজুড়ে পরিবারবান্ধব ও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য জাকির হোসেন বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও শর্ত অনুযায়ী মেলা পরিচালনা করছি। এখানে কোনো জুয়া, অসামাজিক কার্যক্রম বা বিশৃঙ্খলার সুযোগ নেই। গত বছরও সফলভাবে আয়োজন করেছিলাম, এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে।
কুটির শিল্প মেলা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণমাধ্যম ব্যবহার করে মেলার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা উদ্যোক্তা ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
স্থানীয় নাগরিকরা মনে করছেন, শিমুলতলীর কুটির শিল্প মেলা এখন গাজীপুরের এক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে রূপ নিচ্ছে। এটি শুধু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আয়ের সুযোগ তৈরি করছে না, বরং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশীয় শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহও বাড়াচ্ছে।
গাজীপুরবাসীর দাবি, অযথা বিতর্ক নয়-বরং এই ধরনের উদ্যোগকে সহায়তা ও স্বীকৃতি দেওয়া উচিত, যাতে স্থানীয় অর্থনীতি আরও বিকশিত হয় এবং দেশীয় উদ্যোক্তারা এগিয়ে যেতে পারেন।
শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে শিমুলতলীর কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা আজ শুধু একটি মেলা নয়-এটি গাজীপুরের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক বন্ধনের এক উজ্জ্বল প্রতীক।
আজকালের খবর/বিএস