৯৮তম একাডেমি পুরষ্কারে সেরা আন্তর্জাতিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে শাহাদ আমিনের নারী-কেন্দ্রিক পূর্ণদৈর্ঘ সিনেমা ‘হিজরা’কে সৌদি আরব বেছে নিয়েছে।
গত ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সৌদি ফিল্ম কমিশন এ ঘোষণা দেয়।
এরআগে গত সেপ্টেম্বরে ভেনিসের স্পটলাইট সাইডবারে সিনেমাটি প্রিমিয়ার হয়েছিল। সেখানে ‘হিজড়া’ সেরা এশিয়ান চলচ্চিত্রের জন্য NETPAC পুরষ্কার জিতেছে।
সৌদি ফিল্ম কমিশনের বরাত দিয়ে ভেরাইটি, টাইম অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, “হিজরা” ছবিতে সম্পূর্ণ সৌদি অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করেছেন। যার মধ্যে খাইরিয়া নাথমি সিত্তির ভূমিকায়, নওয়াফ আল-ধাফিরি এবং জান্নার প্রধান চরিত্রে নবাগত লামার ফাদান এবং বারা আলেমকে দেখা যাবে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করতে।
স্টোরিলাইনের সারসংক্ষেপে জানানো হয়েছে, গল্পটি নারীকেন্দ্রিক। গল্পের চরিত্র সারা যখন নিখোঁজ হয়ে যায়, তখন যাত্রাটি এক অপ্রত্যাশিত মোড় নেয়। জান্না এবং সিত্তিকে সৌদি আরব জুড়ে অনুসন্ধানে পাঠায়। মেয়েদের বাবা যদি জানতে পারেন তবে তার প্রতিক্রিয়া কী হবে এই ভয়ের ছাপ নিয়ে গল্পটি এগোয়। একটা সময় নিখোঁজ সারার দাদীর জটিল অতীত সম্পর্কে গোপন রহস্য উন্মোচিত হয়, আর এভাবেই তাকে মুক্তির সুযোগ দেয়।
সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন শাহাদ আমিন। গণমাধ্যমকে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, “দ্বিতীয়বারের মতো অস্কারে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করা একটি গভীর সম্মানের। এটা থেকে সকলেই বুঝতে পারছেন আমার দেশ সৌদি সিনেমা নিয়ে একটা বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
সৌদির হিজড়া সিনেমার একটি স্থিরদৃশ্য
“হিজরা” আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি ছিল। আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিত্রগ্রহণ করেছি কারণ আমরা এই গল্পের তাৎপর্যে বিশ্বাস করেছিলাম, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সৌদি নারীদের গল্প, আমাদের ইতিহাসের হৃদয় থেকে বিশ্বজুড়ে বলা হয়েছে,” তিনি যোগ করেন।
আমিন এই ছবিটিকে “চলমান নারীদের নীরব বিপ্লবের” একটি অন্বেষণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যেখানে “প্রজন্ম ও সময় জুড়ে স্বাধীনতা কীভাবে বোঝা যায়” এবং সৌদি আরবে নারীদের জন্য স্বাধীনতার অর্থ কী তা দেখা হয়েছে।
ছবিটি ইরাকি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম সেন্টার জেদ্দা-ভিত্তিক কোম্পানি বাইট আমিন এবং আইডিয়াশন স্টুডিওর নেতৃত্বে প্রযোজনা করেছে এবং রেড সি ফান্ড, ফিল্ম আল-উলা, দা ফিল্ম, দ্য সৌদি ফিল্ম কমিশন, নিওম মিডিয়া এবং ইথ্রা ফিল্ম ফান্ডের সহায়তায় এটি নির্মিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের শেষের দিকে ৩৫ বছরের সিনেমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সৌদি আরব থেকে উঠে আসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নারী সিনেমাটিক কণ্ঠস্বরদের মধ্যে পরিচালক শাহাদ আমিন অন্যতম। তিনি এর আগে ২০২০ সালে তার প্রথম চলচ্চিত্র স্কেলস-এর মাধ্যমে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
এরাআগে ২০১৩ সাল থেকে সৌদি আরব হাইফা আল-মনসুরের ওয়াজদা চলচ্চিত্রের প্রথম এন্ট্রি হিসেবে অস্কারে মনোনয়ন জমা দিয়েছে।