শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. মারজিয়া খাতুনকে এক রোগীর অভিভাবক ‘আপু’ সম্বোধন করায় উত্তেজিত হয়ে অভিভাবকসহ রোগীকে তার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, অভিযোগকারী রোগীর অভিভাবক কাজী মাসুম জেলা শহরের নয়ানী বাজার মহল্লার বাসিন্দা। তিনি দুপুর ২টার দিকে তার ছোট মেয়ের প্রচণ্ড পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনন্যা তাকে প্রয়োজনীয় ঔষধ লিখে দেন। ঔষধগুলো হাসপাতালে না পেয়ে স্থানীয় বিভিন্ন দোকান থেকে কিনে আনেন। তবে একটি কোথাও না পেয়ে আধা ঘণ্টা পর জরুরি বিভাগে ফিরে আসেন তিনি।
মেডিকেল অফিসারের কক্ষে গিয়ে জানতে পারেন, ডা. অনন্যার ডিউটি শেষে তিনি চলে গেছেন। পরে ডা. মারজিয়া খাতুনকে প্রেসক্রিপশনটি দেখিয়ে ‘আপু’ সম্বোধন করে সংশ্লিষ্ট ঔষধটি কোথাও না পাওয়া বিষয়ে জানান তিনি। এ সময় ওই অভিভাবকের ‘আপু’ সম্বোধন শুনে ক্ষেপে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে আপু ডাকছেন কেন? আমি মেডিকেল অফিসার। যান, বের হয়ে যান আমার রুম থেকে।’ এ সময় অভিভাবককে উপর্যুপরি ধমক দিয়ে তার কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডা. তাহেরাতুল আশরাফির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। হয়তো ভুলক্রমে তিনি এমন কথা বলেছেন। তবে আমাদেরকে অফিসিয়ালি অভিযোগ দিতে হলে শনিবার আসতে হবে।’
এদিকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের এমন আচরণে উপস্থিত অনেক রোগী এবং তার অভিভাবকরা একই অভিযোগে তোলেন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। তারা বলেন শুধুই ডা. মারজিয়াই নয়, হাসপাতালে কর্তব্যরত অধিকাংশ চিকিৎসকই এমন আচরণ করেন রোগী এবং তার অভিভাবকদের সঙ্গে।
এ বিষয়ে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহিন বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। রোগী বা তার স্বজনদের সঙ্গে একজন চিকিৎসকের এমন আচরণ শোভনীয় নয়। আমরা যারা এই পেশায় এসেছি, তাদের আচরণ আরও সহনশীল হওয়া উচিত। আমি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া জন্য বলে দিয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের আচরণ পারিবারিক শিক্ষা। তবে রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে আমাদের আরও নমনীয় আচরণ করতে হবে। আমি ডা. মারজিয়াকে এ বিষয়ে সতর্ক করবো।’