জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি ‘অনভিপ্রেত ও সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক’ বলে মনে করেন দলটির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
এমন দাবিকে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে জাতীয় পার্টির এ অংশের মহাসচিবের বাসায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে জরুরি মতবিনিময় সভায় হয়, সেখানে আনিসুল ইসলাম এ মন্তব্য করেন বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে সোমবার। এ আন্দোলনের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিয়ে এদিন কর্মসূচি দিয়েছে জাগপার একাংশ।
তাদের পাঁচ দফার অন্যতম দাবি জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ থেকে দলটির মূল ধারা হিসেবে পরিচিত জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশের প্রধান কার্যালয়ে সম্প্রতি আগুন দেওয়া হয়েছে।
দলটির আরেক অংশের প্রধান আনিসুল ইসলাম বলেন, “জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি করেছে কিছু রাজনৈতিক দল। এ ধরনের দাবি শুধু অনভিপ্রেতই নয়, বরং সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য বিপদজনক ।
“যে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে জাতীয় পার্টি অতীতে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল, সেই জামায়াত কীভাবে আজ জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে, তা জাতির কাছে বিস্ময়কর ও দুঃখজনক।”
জাতীয় পার্টি জন্মলগ্ন থেকেই জনগণের অধিকার, গণতান্ত্রিক চর্চা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারক ও বাহক বলে দাবি করেন তিনি।
সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম বলেন, “দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জাতীয় পার্টি কখনোই কোনো রাজনৈতিক অপরাধে লিপ্ত হয়নি, কিংবা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়নি যাতে নিষিদ্ধ করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভেতরে থেকেই জাতীয় পার্টি বারবার জনগণের কল্যাণ, উন্নয়ন, এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার পক্ষে কাজ করেছে।”
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “কাউকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি আসলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে, জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেয়। তাই এই ধরনের দাবি কেবল অযৌক্তিকই নয়, বরং দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জনগণের রায়ের প্রতি অবমাননা।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, জ্যেষ্ঠ নেতা মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান, সরদার শাহজাহান, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন।
আজকালের খবর/ এমকে