প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ২:৩৬ পিএম

নোয়াখালী হাতিয়ার জেলেরা সাগর থেকে শূন্য হাতে ফিরে আসছে ২০টি ঘাটের এই পেশার সঙ্গে জড়িত লক্ষাধিক জেলে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
জানা যায়, এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম। এ সময় জেলেরা পুরোপুরিভাবে ব্যস্ত সময় পার করে ইলিশ শিকারে। প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিঝুমদ্বীপ, বন্দরটিলা, সুইজের ঘাট, মোক্তারিয়া, দানারদোল, সূর্যমুখী, কাজিরবাজার, বাংলাবাজার ও চেয়ারম্যানঘাটসহ দ্বীপের বড় ২০টি ঘাটের ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার জেলে নৌকা নদীতে বিচরণ করছে। কিন্তু হতাশার কারণ হলো- জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।
প্রতিদিনই শূন্য হাতে ঘাটে ফিরতে হচ্ছে তাদের। মৌসুমের বেশির ভাগ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো লাভের মুখ দেখেনি তারা। অন্যদিকে নদীতে যেতে প্রতিদিনই যে ব্যয় হচ্ছে তাতে আর্থিক দেনার পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনেকে পরিবারের দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। ঘাটগুলোতে হাঁকডাক নেই, দেখা দিয়েছে নীরব নিস্তব্ধতা ও হতাশা।
সূর্যমুখী মাছ ঘাটের শ্রমিক সর্দার নুর ইসলাম জানান, তার অধীনে এই ঘাটে শ্রমিকরা কাজ করে। খালে কোনো নৌকা বা ট্রলার এলে তারা টুরকিতে করে সেই মাছ ডাকের বাক্সে এনে দেয়। প্রতিদিন যে টাকা পায় তা ভাগ করে নেয় এই ৮৫ জন। এই বছর প্রথম থেকে মাছ নেই নদীতে। প্রতিদিন কাজ শেষে ভাগে ৩০-৪০ টাকা করে পায় শ্রমিকরা। এতে নিজেদের চা নাস্তা হয় না। সংসার চালাতে হয় দেনা করে।
সূর্যমুখী ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজুর রহমান নান্টু বলেন, ৯৩ সাল থেকে মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই বছরের মতো এত কঠিন অবস্থা আর কখনো দেখিনি। হাতিয়ায় ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৭ লাখ ৫০ হাজার লোকের বসবাস। এখানে জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৯৫ জন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, ভরা মৌসুমের এই সময় ইলিশ না পাওয়ার কারণ হিসেবে জাটকা নিধন, মা ইলিশ ধরা ছাড়াও ডুবোচর, জলবায়ুর পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়াও উপকূলীয় এলাকায় কলকারখানার বর্জ্য নদীতে আসাতে মাছের বিচরণ অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এ জন্য এসব নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তিনি আশা করছেন মৌসুমের সামনের সময়গুলোতে আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাবে।
আজকালের খবর/ এমকে