
ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে ভুল চাহিদা দিয়েছেন ২৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান। ভুল চাহিদা দেওয়া এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এনটিআরসিএর সুপারিশ অনুযায়ী ভুল চাহিদা দেওয়া এসব প্রধান শিক্ষকের সর্বোচ্চ তিন মাসের এমপিও স্থগিত করা হতে পারে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সঠিকভাবে শূন্য পদের তথ্য সাবমিট করেননি।
ভুল চাহিদার কারণে অনেক প্রার্থীকে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি। তাদের ভুলের কারণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এর দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরই বহন করতে হবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এনটিআরসিএর চিঠি আমরা পেয়েছি।
যে সকল প্রতিষ্ঠান প্রধান ভুল চাহিদা বা ভুল তথ্য দিয়েছেন, নীতিমালা অনুযায়ী তাদের এমপিও তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি কম হতে পারে। তবে ঠিক কতজন প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও স্থগিত করা হবে, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএ জানায়, ৪০১টি শূন্যপদের জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ) ভুল তথ্য দিয়েছেন ২৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও গভর্নিং বডির সদস্যরা। ভুল চাহিদার কারণে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এনটিআরসিএ কর্তৃক ৬ষ্ঠ নিয়োগ সুপারিশের বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পূর্বে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষকের শূন্যপদের চাহিদা/অধিযাচন (ই-রিকুজিশন) অনলাইনে সংগ্রহ করা হয়। ৩নং সূত্রে উল্লিখিত পরিপত্রের ৪.০ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপ্রেক্ষিতে ই-রিকুজিশনে উল্লিখিত শূন্যপদের প্রাপ্যতা সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সঠিক আছে কিনা তা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে শূন্যপদের তালিকাসহ গত ৭ এপ্রিল চিঠি পাঠানো হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক শূন্যপদের চাহিদা যাচাইকৃত তথ্য ১নং সূত্রে উল্লিখিত পত্রে নির্ধারিত সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রেরণ না করায় গত ১৬ জুন ৬ষ্ঠ নিয়োগ সুপারিশ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং ২২ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন গ্রহণ করা হয়।’
এতে বলা হয়েছে, ‘অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শেষে ফলাফল প্রক্রিয়াকরণের পূর্ব মূহুর্তে গত ১৩ জুলাই সূত্রোক্ত ২নং স্মারকে মাউশি অধিদপ্তর হতে কলেজ পর্যায়ের ২৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪০১টি শূন্যপদ বাতিলের জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়।
ইতোমধ্যে নিয়োগ সুপারিশ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রার্থীদের আবেদনের সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে যায় এবং অনেক প্রার্থী উল্লিখিত বাতিলকৃত শূন্যপদে তাদের পছন্দ প্রদান করেন। উপরন্ত উক্ত শূন্যপদ বাতিলের বিষয়টি মাউশি অধিদপ্তর কর্তৃক সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অবগত করানো হয়নি। ফলে এনটিআরসিএ কর্তৃক সার্বিক নিয়োগ সুপারিশ কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে জটিলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।’
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘এমন অবস্থায় ভবিষ্যতে এ ধরনের জটিলতা এড়ানোর জন্য শূন্যপদের সঠিকতা যাচাই সংক্রান্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রেরণ এবং অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরণকৃত ২৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪০১টি শূন্যপদে ভুল চাহিদা প্রদানের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও গভনিং বডির বিরুদ্ধে সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।’
আজকালের খবর/ওআর