
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) আম প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ বিষয়ক দিনব্যাপী একটি বিশেষ উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাঙ্গন কার্যক্রম পরিচালনা দপ্তরের আয়োজনে ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্সের সেমিনার কক্ষে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল– ফলনোত্তর ক্ষতি হ্রাস, আমের প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মাধ্যমে রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও জ্ঞানের বিস্তার, কৃষি শিল্পায়নে অবদান এবং সর্বোপরি উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন ঘোষণা করেন গাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. জি কে মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আম উৎপন্ন হলেও যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির অভাবে এর একটি বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। এমন প্রশিক্ষণ এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে তারা শুধু নিজের জীবিকা নির্বাহে নয়, বরং সমাজে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও অবদান রাখতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় কৃষিকে শুধু শিক্ষার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না রেখে মাঠ পর্যায়ে এর প্রয়োগ ঘটাতে বদ্ধপরিকর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন গাজীপুর জেলার কাউলতিয়া, জয়দেবপুর ও সদর এলাকার ১০ জন উদ্যোক্তা, ১০ জন কৃষক এবং গাকৃবির ১০ জন বিএস ও ১০ জন এমএস পর্যায়ের শিক্ষার্থী।
প্রশিক্ষণ সেশনে আমসত্ত্ব ও রেডি-টু-ড্রিংক আম তৈরির ওপর প্রশিক্ষণ দেন বহিরাঙ্গন কার্যক্রম পরিচালনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিন। আমের জ্যাম ও জেলি তৈরির পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আজিজুল হক। প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে তারা আম প্রক্রিয়াজাতকরণ, এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও ব্যবহারিক দিক তুলে ধরেন।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তা শামীম আল মামুন বলেন, আজকের প্রশিক্ষণ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। ভবিষ্যতে এই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আম প্রক্রিয়াজাত করে আন্তর্জাতিক বাজারেও পণ্য ছড়িয়ে দিতে চাই। গাকৃবির সার্বিক সহযোগিতা পেলে আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারব।
প্রশিক্ষণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা শুধু প্রযুক্তিগত জ্ঞানই অর্জন করেননি, বরং তারা একটি টেকসই কৃষি অর্থনীতির পথে হাঁটার আত্মবিশ্বাসও পেয়েছেন।
সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রহমান।
আজকালের খবর/ওআর