প্রকাশ: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৫:৫৯ পিএম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে একটি আত্মহত্যার ঘটনায় মো. রফিকুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবককে ফাঁসানোর চেষ্টায় মিথ্যা মামলা, মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক ইউপি সদস্যসহ অন্তত ১০ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা গ্রামের পিয়ার হকের ছেলে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রফিকুলের ছোট বোন মোছা. শারমিন আক্তারের বিয়ে হয় একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি মোছা. মর্জিনা বেগম তাদের শয়নঘরের গোপন মুহূর্তে দরজা ও বেড়ার ফাঁক দিয়ে বারবার উঁকি দিতেন। একাধিকবার হাতেনাতে ধরা পড়ার পর স্থানীয়ভাবে শালিসও হয়েছে। কিন্তু, শালিসে কোনো পরিবর্তন না আসায় মতিয়ার ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল গভীর রাতে মানসিক চাপ ও লজ্জাজনিত কারণে মতিয়ার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার পর তার পিতা হোসেন আলী জানান, কেউ দোষী নয়, ছেলেটি নিজেই আত্মহত্যা করেছে। ওই বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি।
রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আত্মহত্যার ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র তাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে শনাক্ত করে মিথ্যা মামলা এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভয়ে তিনি গরু, ছাগল ও দোকানের মালামাল বিক্রি করে প্রথমে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর ২০২৪ সালের ১ মে রাতে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলামের বাড়ির বৈঠকখানায় সাবেক ইউপি সদস্য মো. মাইদুল ইসলামসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে তাকে আরও ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম ওই টাকা গুনে নেন। পুরো ঘটনার ভিডিও প্রমাণ রয়েছে বলে রফিকুল দাবি করেন।
রফিকুল আরও জানান, চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম থানায় মীমাংসার কথা বলে ব্যক্তিগতভাবে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ওই চক্রটি এখনও আমাকে হত্যা এবং আমার বোনকে অপহরণের হুমকি দিচ্ছে। ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়ে আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে, সংসারও ধ্বংসের পথে।
এ বিষয়ে তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সামনে টাকা লেনদেন হয়েছে, তবে আমি কাউকে টাকা দিইনি বা নিইনি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছিল।’
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
আজকালের খবর/ওআর