প্রকাশ: রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৪:২৫ PM

ঋণের টাকা পরিশোধে মাঠকর্মীর চাপের কারণে বরিশালের বাকেরগঞ্জে সুমন ফকির (৩০) নামের এক যুবক ঘরের খুঁটির সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত সুমন উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মধ্য ভাতশালা গ্রামের মৃত আবদুল রশিদ ফকিরের ছেলে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) গভীর রাতে লাশ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়। আজ রবিবার সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন সুমন। সর্বশেষ গত শনিবার ব্র্যাকের মাঠকর্মী খালেদা বেগম কিছু লোকজন নিয়ে সুমনের বাড়ি যান। সুমন তাদের দেখামাত্র ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় খালেদা ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা সুমনকে ঘর থেকে বের হয়ে টাকা পরিশোধের বিষয়ে কথা বলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু, কোনোভাবেই সুমন ঘরের দরজা না খোলায় একপর্যায়ে তারা সেখান থেকে চলে যান।
ওসি আরও জানান, এরপর সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা দরজা খোলার জন্য সুমনকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু, সুমনের কোনো শব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে ঘরের ভেতর দেখতে পান খুঁটির সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় রয়েছে সুমন। এরপর দরজা ভেঙে ঘরের ভেতর গিয়ে সুমনের লাশ দেখতে পান। গভীর রাতে বিষয়টি জানার পর পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়।
আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ওসি।
এ ব্যাপারে ব্র্যাকের মাঠকর্মী খালেদা বেগম বলেন, ‘ঋণ নেয়ার পর থেকেই কিস্তি নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন সুমন। তাকে বারবার বলা সত্ত্বেও সে কোনোভাবেই কিস্তি দিচ্ছিল না। সর্বশেষ গত শনিবার বিকালে ঋণের টাকা আনতে গেলে তার ঘরের দরজায় তালাবদ্ধ দেখি। পার্শ্ববর্তী বাড়িতে সুমনের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হয়। তারা অবহিত করেন সুমন বাড়িতে ছিলেন। এরপর কিছুক্ষণ সুমনের জন্য অপেক্ষা করে সেখান থেকে চলে যাই। গভীর রাতে জানতে পারি, সুমন আত্মহত্যা করেছে।’ এখানে তার কোনও দোষ ছিল না বলে জানান তিনি।
খালেদা আরও বলেন, ‘আমি সুমনের বাড়িতে যাওয়ার পর সুমনের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। তা ছাড়া ঘরের দরজায় তালা ছিল। সেখানে কীভাবে আমি তার ওপর চাপ প্রয়োগ করলাম?’
নিহতের চাচা মোতলেব ফকির বলেন, ‘খালেদা মিথ্যাচার করছে। সুমনের ঘরের দরজায় কোনও তালা ছিল না। খালেদা লোকজন নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সুমন দরজা বন্ধ করে ঘরে আশ্রয় নেয়। পরে তার লাশ বের করা হয়।’ তাদের চাপের কারণেই সে (সুমন) আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
আজকালের খবর/ওআর