প্রকাশ: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:১২ PM আপডেট: ২৬.০৪.২০২৫ ৭:১৮ PM

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় তেতৈতলা মেঘনা পুরাতন ফেরিঘাট এলাকা থেকে ১৫ হাজার লিটার চোরাই তেল জব্দ করেছেন স্থানীয় জনতা। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে চোরাই তেল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অয়েল ট্যাংকের ও দুটি ট্রলার জব্দ করে পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোপালগঞ্জের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা বোরহান ও গজারিয়ার কিছু বিএনপি নেতা সম্মিলিতভাবে বর্তমানে চোরাই তেলের এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন। চক্রটি তেল চুরির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার তেতৈতলা মেঘনা পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় চোরাই তেলের ব্যবসা করতেন আওয়ামী লীগ নেতা বোরহান। তার বাসা গোপালগঞ্জে হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে তিনি গোপালী বোরহান নামে পরিচিত। আওয়ামী লীগ সরকার পতন পতনের পর গত বছরের ২২ আগস্ট রাতে ৫০ হাজার লিটার চোরাই তেলসহ জনতার হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর কিছুদিন তার এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা মোকলেস দেওয়ানসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় তিনি আবার এই ব্যবসা শুরু করেছেন।
এদিকে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তেতৈতলা গ্রামের মেঘনা পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় চোরাই তেল পাচার হচ্ছে এমন খবরে সেখানে ছুটে যান তারা। গিয়ে দেখেন দুটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে থাকা ড্রাম থেকে পাইপের মাধ্যমে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের অয়েল ট্যাংকারে তেল লোড করা হচ্ছে। এসময় ফারুক নামে একজনকে আটক করে জনতা। জনগণের জেরার মুখে চোরাই তেলের কথা স্বীকার করে সে। পরে জনগণের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে এই কাজের সাথে জড়িত ফারুকসহ কয়েকজন কৌশলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে তারা এসে তেলভর্তি একটি অয়েল ট্যাংকার আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
জনতার হাতে আটক ফারুক জানান, এই তেল বোরহান সাহেবের। তিনি ঢাকায় থাকেন স্থানীয়ভাবে এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন বিএনপি নেতা মোকলেস দেওয়ান।
এদিকে, বিষয়টি সম্পর্কে জানতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোকলেস দেওয়ানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন ব্যস্ত আছি এই বিষয়ে পরে কথা বলবো। পরবর্তী সময়ে তাকে অসংখ্যবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বোরহানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলো সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন্স) মফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। আপনাদের পরে আপডেট জানাবো।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা তেলসহ একটি গাড়ি আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। গাড়িতে কি পরিমাণ তেল রয়েছে তা বলতে পারবো না। কিছু তেল নদীতে দুটি ট্রলারে ড্রামের ভেতর রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
আজকালের খবর/ওআর