বাঁয়ে লাল চিহ্নিত বৃত্তে দুই ছাত্রীকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত, ডানের লাল অংশে আড্ডা দিচ্ছিলেন পারভেজ ও তার বন্ধুরা
রাজধানীর বেসরকারি প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাম আসা দুই নারী শিক্ষার্থীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে র্যাব। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সেই দুই শিক্ষার্থীকে ধরতে কাজ শুরু করেছে পুলিশের এই এলিট ফোর্স।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) উত্তরা র্যাব-১-এর কার্যালয়ে পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম।
তিনি বলেন, আদালতও বলেছেন দুই নারী শিক্ষার্থীকে হাজির করতে। ওই দুই ছাত্রীর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য সংগ্রহ করেছি। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ধরতে র্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে অন্যতম দুই আসামি মেহরাজ ইসলাম ও হৃদয় মিয়াজি। এ দুজন হত্যার উদ্দেশে নাকি অন্য কোনো উদ্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল—এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছেন তাদের বন্ধু-বান্ধবরা ডেকেছেন এবং তারা সেখানে গিয়েছিলেন। হত্যার উদ্দেশে গিয়েছিলেন এটি এখনো স্বীকার করেনি। তবে পলাতক অন্য আসামিদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূল ঘটনা জানা যাবে।
প্রভাব দেখাতে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে প্রভাব দেখাতে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ছয় নম্বর আসামি এখনো পলাতক। তাকে ধরতে পারলে হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ জানা যাবে।
পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহারভুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে র্যাব।
প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে লে. কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম বলেন, প্রযুক্তিগত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলাম বগুড়ার সাতমাথা এলাকায় অবস্থান করছে। র্যাবের আভিযানিক দল বগুড়ায় তার গতিবিধির ওপর নজরদারি অব্যাহত রাখে।
পরবর্তী সময়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জানা যায়, মেহেরাজ স্থান ত্যাগ করে গাইবান্ধায় অবস্থান করছে। এরপর র্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় মামলা রুজু হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে (২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায়) গাইবান্ধা সদর থানাধীন সাহাপাড়া ভবানীপুর এলাকা থেকে মেহেরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, মেহেরাজ গাইবান্ধায় তার মামা শ্বশুরের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছেন।
এদিকে, পারভেজকে হত্যার ঘটনায় নাম আসা দুই ছাত্রীকে খুঁজে বের করতে বলেছেন আদালত। এ মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজির রিমান্ড শুনানিতে গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহ।