ফেনীর সোনাগাজীতে আবুল হাসেম (৫০) নামের এক বিএনপি কর্মীকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর একটি হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। দুর্বৃত্তরা বোরকা পরে এই হামলা চালান। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজারসংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আবুল হাসেম উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরদরবেশ গ্রামের আবদুর শুক্কুরের ছেলে। কয়েক বছর ধরে তিনি পরিবার নিয়ে সোনাগাজী পৌর এলাকার পশ্চিম বাজারে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বোরকা পরিহিত ২০ থেকে ২৫ ব্যক্তি পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওলামা বাজার এলাকায় আবুল হাসেমের পথরোধ করে। এরপর তাঁকে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাম হাত ও একটি পা কুপিয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। তাঁর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন রয়েছে। স্থানীয়রা হাসেমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবুল হাসেমের ভাতিজা শেখ ফরিদ জানান, তাঁর চাচা মহিষের দুধ সংগ্রহ করতে ভোরে মোটরসাইকেলে করে সাহেবের ঘাট ব্রিজ এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে ওলামা বাজার এলাকায় হামলার শিকার হন। মৃত্যুর আগে হাসেম কয়েকজন হামলাকারীর নাম বলে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রাসেল নামের একজনকে পুলিশ আটক করেছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আকতার হোসেন (৩৫), জিয়া (২২), হাফেজ (৩৫), আমির হোসেন ওরফে ননা মিয়া (৩৫), মো. সুমন ওরফে টিটু (২৮), শিফন (৩০), মাসুদ (২৬), রুবেলসহ (২৮) অন্তত আরও ২৫ জন ছিলেন।
জানা গেছে, আবুল হাসেম ২০২১ সালে একই এলাকার কৃষক বেলাল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। ওই ঘটনায় তাঁর পরিবারের আরও অন্তত ১০ সদস্যকে আসামি করা হয়। দীর্ঘ তিন বছর কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং সোনাগাজীতে বসবাস শুরু করেন। তাঁর স্বজনদের দাবি, সেই পুরোনো বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, ‘হাসেম আমাদের দলের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। কোনো পদে না থাকলেও মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বায়েজীদ আকন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ববিরোধের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড। রাসেল নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আবুল হাসেমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁর পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আজকালের খবর/ এমকে