প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:০৮ PM

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কার্যত তিন দিন দেশ সরকারশূন্য ছিল। গত ৮ আগস্ট তিনিসহ ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ জন শপথ নেন। পরে রাষ্ট্র সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যু সামনে আসে এবং সেগুলো নিয়ে কাজও চলেছে।
সম্প্রতি ব্যক্তির কাছ থেকে ড. ইউনূস সরকারের ন্যূনতম পাঁচ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি উঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘মার্চ ফর ইউনূস স্যার’ ব্যানারে একদল যুবককে অনশন করতে দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, ড. ইউনূস সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর করা জন্য রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশন শুরু করেছেন একদল যুবক। প্রয়োজনে তারা আমরণ অনশন শুরু করবেন। তাদের মাথার উপরে আরও একটি ব্যানার দেখা যায়। সেই ব্যানারের শিরোনামে উল্লেখ রয়েছে- আগে সংস্কার পরে নির্বাচন; আগে জনতা পরে ক্ষমতা। তার নিচেই লেখা রয়েছে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নূন্যতম ৫ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক অবস্থান পরে চূড়ান্ত আমরণ অনশন। সেখানে তাদের পাঁচটি দাবির কথা উল্লেখ করা রয়েছে। সেগুলি হলো- ১.অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেই ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের বিচার শেষ করতে হবে। ২. নূন্যতম আগামী পাঁচ বছর রাষ্ট্র সংস্কার চলবে তারপর নির্বাচন। ৩. আগে স্থানীয় সরকার পরে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। ৪. প্রশাসনের মধ্যে যেখানে ফ্যাসিসদের দোসর রয়েছে তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে এবং যোগ্য লোক বসাতে হবে। ৫. নির্বচানে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম স্নাতক হতে হবে।
অনশনে অংশগ্রহণকারী এক যুবক বলেন, আমরা ড. ইউনূস স্যারকে আগামী পাঁচ বছর চাই। কারণ তার পাঁচ বছরের মধ্যে রাষ্ট্রের সব সংস্কার শেষ হোক। উনি ছাড়ার সংস্কার সম্ভব না। আমাদের যে রাজনৈতিক দলেগুলো রয়েছে তারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। তাছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অনেক তাজা প্রাণ হারিয়েছি। এসবের বিচার ড. ইউনূস ছাড়া সম্ভব না।
নির্বচানে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আরেক যুবক বলেন, যারা নির্বাচনে অংশ নেন তাদের অধিকাংশ নিজের নাম লিখতে পারেন না। তারা ক্ষমতার জুড়ে এমপি হয়ে যান। শিক্ষিত নির্বাচিত প্রতিনিধি দেশ ও জাতির উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে পারবেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম গত ২৯ মার্চ নিজের ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন স্টেটসম্যানকে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার আজীবন থাকবে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারজিসের এ স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্ট পড়েছে ৩৭ হাজারের বেশি। সেখানে নানাজন নানারকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অনেকেই সারজিসের সঙ্গে যেমন একমত পোষণ করেছেন, তেমনি অনেকে তীব্র বিরোধিতাও করেছেন।
কেউ কেউ লিখেছেন, মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন নোবেলজয়ী বাংলাদেশীকে বাংলাদেশের উন্নয়নে যেভাবে কাজে লাগানো যেত, অতীতের সরকার সেটি না করে বরং তাকে অব্যাহতভাবে নাজেহাল করেছে। অপমান করেছে।
আজকালের খবর/ওআর