প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ২:৪৩ PM আপডেট: ১৮.০৪.২০২৫ ২:৫৩ PM

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগ থিসিস মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীর আনা অভিযোগ ‘চক্রান্তমূলক ও মানহানিকর’ উল্লেখ করে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ৪ দফা দাবিতে বিভাগের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রথম দিনের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) একই দাবি দিয়ে সকাল ৯টা থেকে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
তাদের দাবি, অভিযোগকারী শিক্ষার্থী সাজিদ ইকবালের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অভিযুক্ত শিক্ষক ড. আফসানা হকের এই ঘটনায় কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও তারা উল্লেখ করেন।
শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবিগুলো হলো- তৃতীয় পরীক্ষক নির্ধারণে ড. আফসানা হকের সংশ্লিষ্টতা নেই—এই মর্মে বিভাগীয় বিবৃতি, সাজিদ ইকবালের থিসিসের উন্মুক্ত মূল্যায়ন আজকের মধ্যে তিন পরীক্ষকের মাধ্যমে সম্পন্ন, গোপন তথ্য ফাঁসের ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত করে তথ্যদাতার পরিচয় প্রকাশ, অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে সাজিদ ইকবালের বিরুদ্ধে বিভাগ কী ব্যবস্থা নেবে তা লিখিতভাবে প্রকাশ করতে হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে পাঠানো এক অফিস আদেশে জানানো হয়, ঘটনাটি তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে গণিত ও পদার্থ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহবুব কবিরকে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সোহেল রানা এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (টিচিং) ড. এ বি এম কামরুজ্জামান।
কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এক লিখিত বিবৃতিতে জানায়, ‘বিভাগটি গত ছাব্বিশ বছর ধরে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গত ১৯ মার্চ বিভাগের প্রাক্তন এক ছাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেইসবুক’ এবং অনেকগুলো পত্রিকায় তার থিসিস মূল্যায়ণ নিয়ে অভিযোগ তোলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, কমিটির বাইরের একজন শিক্ষক তার থিসিস মূল্যায়ণের জন্য ২য় ও ৩য় পরীক্ষক নির্বাচন করে তাদের মাধ্যমে থিসিসের নম্বর কমিয়ে ৮ম সেমিস্টারে তার চূড়ান্ত ফলাফলে কারসাজি করেছেন, অভিযোগটি গুরুতর। পরীক্ষাবিধি অনুযায়ী এমন করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগে মনগড়া, অসত্য অনেক কথা উল্লেখ করেছে- যা প্রমাণের পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে ও গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। এতে বিভাগের শিক্ষক, বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিবৃতিতে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সকল শিক্ষকরা এই ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করেছে।
আজকালের খবর/ওআর