প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:০৫ PM আপডেট: ১৫.০৪.২০২৫ ৮:৫১ PM

আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে টিকিট ব্ল্যাক হওয়া দন্ডনীয় ধারাকে পৃষ্টপোষকতা করছেন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে টিকিট ব্ল্যাকের অভিযোগ রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন প্রযোজন। শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও ওপেন সিক্রেট এ বিষয় দেখার কেউ নেই। সর্বশেষ ‘বরবাদ’ সিনেমার টিকিট চড়ামূল্যে ব্ল্যাকারদের কাছে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ঈদুল ফিতরে শাকিব অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমাটি মুক্তি পায় মধুমিতাসহ ১২০টি সিনেমা হলে। প্রথম দিন থেকেই অধিকাংশ স্ক্রিনে উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এ অবস্থায় মধুমিতায় ডিসি ২০০ টাকার টিকিট বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়। রিয়াল ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা ধার্য করা হয়। অথচ এমন করে টিকিট রেট বাড়ানোর নিয়ম নেই। রেট বাড়াতে হলে জেলা তথ্য অফিসের অনুমতি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সেটা নেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অপরদিকে শো প্রতি ১০০ টিকিট ছাড়া হয় ব্ল্যাকে। যার মূল্য মধুমিতা কর্তৃপক্ষ সাড়ে ৩ শ’ করে রাখে। এক্ষেত্রে সরেজমিনে ব্ল্যাকারদেও পাঁচ থেকে সাড়ে ৫ শ’ টাকায় টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে। এতে করে নির্ধারিত রেটের চেয়ে মধুমিতা ১৫০ টাকা (ডিসি) বেশি মুনাফা করছে। যার হিসাব প্রযোজককে দিতে হয় না। কেবল সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রেটের ওপর শেয়ার মানি পান প্রযোজক। কিন্তু মধুমিতা, সাভার সেনা বা উলকায় উপচে পড়া দর্শক সমাগম হলেও প্রযোজকের কোনো লাভ নেই, বরং লাভের বদলে উল্টো ক্ষতির মুখে পড়েছেন— এমন অভিযোগ করেছেন এই সিনেমার প্রযোজক।
তিনি বলেন, এমন চিত্র শুধু মধুমিতায় না সাভার সেনা, উলকাসহ আরো কয়েকটি হল জড়িত। আমি তাদের বার বার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেও ফল পাচ্ছি না। বিষয়টি আমি প্রদর্শক সমিতির সেক্রেটারি সাহেবকেও জানিয়েছি ঈদের দু’দিন পরেই, তিনি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
প্রযোকের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রদর্শক সমিতির সেক্রেটারি আওলাদ হোসেন উজ্জলের দাবি, ‘বরবাদ’ সিনেমার প্রযোজক আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, আমি ইতিমধ্যে অভিযুক্ত হলগুলোতে আমাদের ভ্রাম্যমান টিম পাঠিয়েছি। কয়েকজনকে মৌখিকভাবে সাবাধানও করেছি। আসলে প্রযোজকের নিজস্ব লোকবলও থাকা প্রয়োজন, থাকলে চেক দেওয়া যেত। তিনি টিকিট ব্ল্যাক ঠেকাতে অভিযুক্ত হল মালিকদের প্রতি প্রযোজকবান্ধব ব্যবসায়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রির এই প্রবণতা মধুমিতার শুরুর দিক থেকে বলেই এটা এ সিনেমার হলের অতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে —বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাচীন এক সিনেমা হল মালিকের দাবি। তিনি বলেন, তারা শুধু সিনেটার টিকিট ব্ল্যাকে বিক্রিই করেন না উপরোন্তু ব্ল্যাকারদের কাছ থেকেও কমিশন নেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে মধুমিতার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশাদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে (০১৭১১...২৮৪) চেষ্টা করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
আজকালের খবর/আতে