শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫
বৃদ্ধি পাবে পর্যটকদের নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা
নাটোর শহর আলোকিত করতে স্থাপিত হচ্ছে ৫০০ সড়ক বাতি
মো. মামুনুর রশীদ, নাটোর
প্রকাশ: বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:০৩ PM আপডেট: ০৯.০৪.২০২৫ ৮:০৫ PM
নাটোর শহরের যানজট নিরসন ও যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শেষ হয়েছে। শহর আলোকিত করতে প্রশস্তকরণ ওই সড়কের মাঝখান দিয়ে স্থাপিত হচ্ছে ২৫০টি পোলে ৫০০ সড়ক বাতি। কোভিড-১৯ প্রকল্পের আওতায় এবং বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সড়ক বাতি স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করছে নাটোর পৌরসভা। 

এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শহর আলোকিত হওয়ার পাশাপাশি বৃদ্ধি পাবে সৌন্দর্য্য। পাশপাশি বাড়বে নাগরিক সেবা। বর্তমানে এ প্রকল্প কাজ চলমান রয়েছে।

নাটোর পৌরসভার সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কোভিড-১৯ প্রকল্পের আওতায় নাটোর শহরকে আলোকিত করতে ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি সড়ক বাতি স্থাপনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। শহরের হরিশপুর গোলচত্বর থেকে বনবেলঘড়িয়া বাইপাস পর্যন্ত ক-পাঠ ও মাদরাসা মোড় থেকে উত্তরা গণভবন মোড় পর্যন্ত খ-পাঠ হিসাবে ধরে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের প্রশস্তকরণ সড়কের মাঝখান দিয়ে ২৫০টি পোলে ৫০০ সড়ক বাতি স্থাপন করা হবে। এতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে লটারির মাধ্যমে কাজ পান ঝিনাইদহ জেলার কাঞ্চননগর এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিশিথ বসু। ওই প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কার্যাদেশ দিয়ে সড়কবাতি স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সড়ক বাতি স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং শেষ হবে আগামী ২০২৫ সালের ৪ জুন। সড়ক বাতি স্থাপনের সময়কাল ধরা হয় ২৭০ দিন। এ প্রকল্প কাজটি নিশিত বসু নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেলেও পরবর্তীতে সাব-ঠিকা নেন নাটোর শহরের বড়গাছা এলাকার জামান নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে হরিশপুর গোল চত্বর থেকে বনবেলঘড়িয়া বাইপাস এবং মাদরাসা মোড় থেকে উত্তরা গণভবন মোড় পর্যন্ত সহ পুরো নাটোর শহর আলোকিত হবে বিদ্যুতের আলোয়। ফলে রাত্রিকালীন সময়ে এসব পথ দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল ও নিরাপদে জনসাধারণের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ শহর থেকে পর্যটনখ্যাত উত্তরা গণভবনে যাওয়া আসা করতে স্থানীয় নাগরিক ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকদের নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। 

এদিকে নাটোর শহর এবং শহর থেকে দুই বাইপাস ও উত্তরা গণভবন পর্যন্ত সড়ক বাতি স্থাপনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় নাগরিক, ব্যবসায়ী, যানবাহন চালক-মালিক, ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজ। 

শহরের কানাইখালির বাসিন্দা ও বিশিষ্ট লেখক-গবেষক খালিদ বিন জালাল বাচ্চু এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আরো অনেক আগেই সড়ক বাতি কিংবা শহর আলোকিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। বর্তমানে শহর আলোকিত করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হলে আলোকিত শহর গড়ে উঠবে এবং শহরের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কেননা, শহরের প্রধান সড়কের কিছু কিছু স্থানে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকার কারণে রাতে সেসব স্থানে ছিনতাইসহ নানা অপরাধ সংঘঠিত হয়। এ থেকে শহরবাসী রক্ষা পাবেন। 

স্থানীয় দিঘাপতিয়া এমকে কলেজের প্রভাষক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, শহরের মাদরাসা মোড় থেকে দিঘাপতিয়া উত্তরা গণভবন পর্যন্ত সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা শহরে অবস্থান করে উত্তরা গণভবনে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা বা রাতে ফিরতে সড়কে নানা সমস্যায় পড়তে হয় দর্শনার্থীসহ সাধারণ পথচারীদের। তাই সড়ক বাতির কাজ সম্পন্ন হলে নিঃসন্দেহে এ সমস্যার উত্তোরণ ঘটবে।

নাটোর জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর শহরের যানজট অনেকাংশ দূর হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমানে সড়কের মাঝখানের ডিভাইডারে সৌন্দর্য্য বর্ধন বিভিন্ন ফুল গাছ লাগানোর জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এখন সড়ক বাতি লাগানো হলে শহর আলোকিত হওয়াসহ সৌন্দর্য বাড়বে এবং শহরের ভেতর অপরাধ প্রবণতাও কমে যাবে। তিনি বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

নাটোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক জানান, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে বর্তমানে নাটোর পৌরসভার আওতায় শহরের বিভিন্ন সড়ক, ১২টি পানির পাম্প, পাঁচটি গোরস্থান, অফিস ভবন ও খোলা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ৫ হাজার ৫০০টি সড়ক বাতি রয়েছে। এতে ৮ লাখ টাকার উপরে বিদ্যুৎ বিল পৌরসভা থেকে পরিশোধ করা হয়। চলমান সড়ক বাতি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সমুদয় বিল পৌরসভা থেকে পরিশোধ করা হবে। তবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার ক্ষেত্রে পৌর নাগরিকের কাছে আলাদাভাবে ট্যাক্সে বসানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সড়ক বাতি থেকে পৌর নাগরিকদের কাছে কোনো বিদ্যুৎ বিল ধার্য করা হবে না।

নাটোর পৌরসভার দায়িত্বরত প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আসমা খাতুন জানান, পৌর নাগরিকের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শহর আলোকিত হওয়ার পাশাপশি প্রধান সড়কে অপরাধ প্রবণতা ও ছোট-বড় যানবাহনের দুর্ঘটনা কমে যাবে। মানুষজন আলোকিত শহরে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন। তিনি বলেন, প্রাচীনতম শহরকে তিলোত্তমা করতে অনেক কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই তা বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।  

আজকালের খবর/ওআর








সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় সংসদে আসন ৬০০ করার সুপারিশ
এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪০
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
সিরাজগঞ্জে চীন বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
নির্বাচন দেরিতে হলে দেশের মানুষ হতাশায় ভুগবে: রিজভী
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
ছোট্ট পাঠক সাবিহা : পত্রিকা পড়া যার নেশা
ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগ নেতা টানু মল্লিক গ্রেপ্তার
কোণঠাসা কোক-পেপসি, জায়গা নিচ্ছে দেশীয় পানীয়
টঙ্গীতে ভাই-বোনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে খাবার পানি বিতরন
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft