
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ করে পদত্যাগের কথা সামনে আনেন তিনি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের আয়োজনে ‘মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসব’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামিল আহমেদ। অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন এই নাট্যব্যক্তিত্ব।
তবে শিল্পকলার সচিবের পদত্যাগপত্র গ্রহণের এখতিয়ার নেই; সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তা গ্রহণের এখতিয়ার রয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান জানান, তিনি এখনও চিঠি পাননি, তবে বিষয়টি শুনেছেন। চিঠি পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারবেন।
পদত্যাগপত্র হাতে নেওয়ার পর শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন মঞ্চে এসে বলেন, ‘শিল্পকলার সচিব হিসেবে এটি (পদত্যাগপত্র) শুধু হাতে নিয়েছি। কিন্তু শিল্পকলা একাডেমির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন বিশিষ্ট নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ ১৯৫৫ সালের ৭ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এ বিভাগেই শিক্ষকতা করছেন।
১৯৭৮ সালে ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার স্নাতক প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন সৈয়দ জামিল আহমেদ। একই বছর তিনি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার টেলিভিশন প্রডিউসারস ট্রেইনিংয়েও প্রথম হন। অতুল মেধার স্বাক্ষর রেখে ১৯৮৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক থেকে থিয়েটার আর্টসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে অর্জন করেন পিএইচডি ডিগ্রি।
তার আলোচিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘অচিনপাখি ইনফিনিটি’, ‘ইনডিজেনাস থিয়েটার ইন বাংলাদেশ’, ‘ইন প্রেইজ অব নিরঞ্জন’, ‘ইসলাম থিয়েটার’, ‘এন্ড বাংলাদেশ’, ‘রিডিং এগেইন্সট দ্য ওরিয়েন্টালিস্ট গ্রেইন’,‘পারফরম্যারন্স অ্যান্ড পলিটিকস এন্টুইনড উইথ আ বুদ্ধিস্ট স্ট্রেইন’. ‘অ্যাপ্লাইড থিয়েট্রিক্স’, ‘এসেস ইন রিফিউসাল’।
সৈয়দ জামিল আহমেদ একাধারে পণ্ডিত, নাট্য পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড মিউজিক বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তার উল্লেখযোগ্য থিয়েটার প্রযোজনার মধ্যে রয়েছে- ‘কমলা রানীর সাগর দীঘি’ (১৯৯৭), ‘এক হাজার আর এক থি রাত’ (১৯৯৮), ‘বেহুলার ভাসান’ (২০০৪), ‘পাহিয়ে’ (২০০৬) এবং ‘সং ভং চং’ (২০০৬)।
আজকালের খবর/ওআর