বাংলাদেশ সুইটস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আজ শনিবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মিষ্টি ও বেকারি পণ্যসহ অন্যান্য আইটেমের ভ্যাট ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে এক মানববন্ধন সংগঠনের সভাপতি শহীদুল্লাহ কোরাইশীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন- সুইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. কফিল উদ্দিন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ছালেহ আহমেদ সুলেমান, অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আনোয়ারুল কিবরিয়া, উপদেষ্টা আলহাজ নুরুল আলম, অর্থ সম্পাদক আলাউদ্দীন আল হাসেম, দপ্তর সম্পাদক এমএ সবুর, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক নীলাদ্র কুমার দে, কাজী মনিরুল ইসলাম উজ্জ্বল, আ.ই.মু. তালেব, সঞ্জয় আচার্য, মুজিবুর রহমান, হারাধন দত্ত, জিয়া উদ্দীন আল মামুন, কলিমুল্লাহ ও মো. আবু বকর সিদ্দিক।
বক্তারা বলেন, ফুড প্রসেসিং সেক্টর বাংলাদেশে একটি সমৃদ্ধ ও সম্ভাবনাময় সেক্টর। এই সেক্টরে লাখ লাখ মানুষ বিভিন্নভাবে জড়িত। বিশেষ করে কর্মসংস্থান, কাঁচামালের যোগানদাতা ও এদেশের কোটি কোটি কৃষক। এই সেক্টর ধ্বংস হলে কোটি কোটি মানুষ বেকার হবে, সেইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বিরাট ঘাটতির সৃষ্টি হবে। কেননা এই সেক্টরে অনেক পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হয়।
আমরা সবসময় সরকারের সব আইন-কানুন মেনে নিয়মিত ভ্যাট ট্যাক্স পরিশোধ করে ব্যবসা করে থাকি। এরপরেও কিছু কুচক্রি মহলের অপতৎপরতায় বর্তমান এই শিল্প রুগ্ন শিল্পে পরিণত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। জ¦ালানি গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি, সেইসঙ্গে ময়দা, পাউডার দুধ, চিনি, তৈলসহ বিভিন্ন কাঁচামালের অব্যাহতভাবে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নাভিশ^াস উঠেছে। ইতিমধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে, আরো অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে। তাই আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ বা তারও নিচে নিয়ে এসে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় অদূর ভবিষ্যতে ফ্যাক্টরি বন্ধ করা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা থাকবে না।
যারা নিয়মিত ভ্যাট দেন তাদের ভ্যাটের হার বৃদ্ধি না করে, যারা এখনও ভ্যাটের আওতায় আসেনি তাদেরকে ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসা এবং নতুন নতুন ভ্যাটের খাত সৃষ্টির মাধ্যমে ভ্যাট আহরণের উদ্যোগ গ্রহণ করলে সরকারের রাজস্ব আরো অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
আমাদের তৈরি বেশিরভাগ পণ্য নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তরা গ্রহণ করে। ১৫/২০/২৫/৩০ টাকার পণ্যগুলো ভ্যাটসহ জ¦ালানি ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়লে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে যাবে। এসব কারণে একটা সঙ্কটের সৃষ্টি হবে। এই সঙ্কট সৃষ্টি হলে মানবিক বিপর্যয়ও ঘটবে। যেটার দায় সরকার কোনোক্রমে এড়াতে পারে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই শিল্পটি শ্রমঘন শিল্প। এই শিল্পের বিপর্যয় ঘটলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশাল একটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন জীবিকার উপর আঘাত আসবে। সরকারের উচ্চ ভ্যাট নীতির কারণে এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতে পারে।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহীদুল্লাহ কোরাইশী সরকারকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে মিষ্টি ও বেকারি পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করে সর্বনিম্ন হারে ভ্যাট নির্ধারণের দাবি জানান। অন্যথায় সংগঠনের উদ্যোগে জনমত সৃষ্টি করে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
আজকালের খবর/ওআর