প্রকাশ: শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:৪২ PM আপডেট: ১৮.০১.২০২৫ ৫:৫০ PM
মুজিব কিল্লা প্রকল্পের ডিপিডি নুরুল ইসলাম এবং সহকারী প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহেল কাফির দুর্নীতি অনুসন্ধান ও শাস্তির দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
গত ১৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) এই অভিযোগপত্রটি জমা দেন কুমিল্লা লাকসামের নাহিদ আজগর।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পতিত সরকারের শেষ মুহূর্তে মুজিব কিল্লা প্রকল্পে তড়িঘড়ি করে কোনো ধরনের অফিসিয়াল নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেশ কিছু প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়। পিপিআর অনুযায়ী, দরমূল্যায়ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন প্রকল্পের পিডি ও ডিপিডি। কিন্তু, মুজিব কিল্লায় চলছে সম্পূর্ণ ভিন্ন নিয়ম! এখানে অনলাইনে টেন্ডার মূল্যায়ণে পিডির দায়িত্ব পালন করছেন বিভিন্ন দুর্নীতি ও নিজ দপ্তরে স্ত্রী কাসফিয়া তামান্নার নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাসিবা কন্সেন্ট্রেশন। ঠিকাদারি কাজে অভিযুক্ত ইতোমধ্যে জনবহুল পত্রিকায় আলোচিত সহকারী প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল্লাহেল কাফি এবং ডিপিডি মো. নুরুল ইসলাম। যেসব ঠিকাদার ডিপিডি ও এপিডির সঙ্গে নেগোসিয়েশনে রাজি হননি তাদের করা হয় ব্যাপক হয়রানি। চাহিদা পূরণ করতে না পারায় বেশকিছু ঠিকাদার সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে নোয়া দেয়া হয়নি। ডিপিডি মো. নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার আলোর বান্ধবীর স্বামী শাহ রিয়াজ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকের সঙ্গে পারিবারিক সখ্যতার সুযোগে তার দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুদকের মাধ্যমে ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, ডিপিডির অনৈতিক নির্দেশ না মানায় পরবর্তীতে ডিপিডির কথিত শ্যালক আনোয়ারকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আবদুল ওয়াদুদের সহায়তায় মুজিব কিল্লা প্রকল্প হতে বের হতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার বাসায় অবাধ যাতায়াত থাকায় তিনি ধরাকে সরা হিসেবে চালিয়ে যাচ্ছেন। তার অবাধ্য হলেই প্রশাসনিক টর্চার শুরু হয়। তিনি টেন্ডারের রেট কোড বিক্রি করে দুর্নীতির টাকায় ঢাকার লালমাটিয়া ও ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ২টি অভিজাত ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। এছাড়া মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটিতে তার ৫ কাঠা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৫ কাঠার প্লট রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেন। তার স্ত্রীর নামে বুড়িচং উপজেলায় গড়ে তোলেন বিশাল গরুর খামার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সেখানে তার শতাধিক উন্নত জাতের গরু রয়েছে। ডিপিডি মুজিব কিল্লা প্রকল্পের দুর্নীতির টাকায় তার বড় ছেলে আরিয়ানকে কিছুদিন পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যয়বহুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার জন্য পাঠিয়েছেন। ডিপিডি মো. নুরুল ইসলাম এমন জঘন্য অপকর্মে জড়িত হলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলাদের ছত্রছায়ায় এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে ডিপিডি মো. নুরুল ইসলামের দাপ্তরিক দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে আবেদন জানানো হয়।
আজকালের খবর/ওআর