বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত শহর কক্সবাজারে ছুটে আসছে লাখো পর্যটক। তিনদিনে অন্তত সাড়ে ৩ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটেছে কক্সবাজারে। সারাদেশ থেকে ভ্রমণের জন্য আসা নানা শ্রেণি পেশার মানুষের উপস্থিতিতে কক্সবাজার এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। অতিরিক্ত পর্যটকের ছাপে সকাল-সন্ধ্যা রাস্তাঘাটে তীব্র ভিড় ও যানজটের কবলে পড়েন লোকজন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা, লাবনী ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা যায় চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। অনেকে সমুদ্রের নোনাজলে শরীর ভিজিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতেছিলেন। এছাড়া সমুদ্রস্নানের পাশাপাশি টিউবে গা ভাসিয়ে মেতে উঠেন। আর মাঝে মাঝে জেড স্কী করে সমুদ্রের নীল জলরাশি দেখতে ছুটে যান ভ্রমণপিপাসুরা। আবার অনেকে বালুচরে বসে প্রকৃতি আর হিমেল হাওয়ায় অনুভূতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ ঘোড়া বা কিটকট চেয়ারে বসে একান্ত সময় পার করছেন। এভাবে সবখানে বিরাজ করছে আনন্দ-উৎসব।
এদিকে শুক্রবার ছুটির দিনে অতিরিক্ত পর্যটক আসায় শহরের প্রায় রাস্তা ঘাটে জ্যাম লেগেছিল। স্থানীয় ও পর্যটকরা গন্তব্যে ফিরতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল।
পর্যটক মিলন তালুকদার বলেন, ছুটির দিন তাই সমুদ্র সৈকতে অনেক মানুষ। সাগরতীরে হাঁটার মতোও সুযোগ হচ্ছে না। তবে অনেক পর্যটক এক সাথে আগমন করায় বেশ আনন্দ আর ভালো লাগছে।
যানজট সবচেয়ে বেশি লক্ষ্মণীয় শহরের কলাতলী ডলফিন মোড়, সুগন্ধা, বাসটার্মিনাল, বার্মিজ মার্কেট ও বাজারঘাটা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, শহরের প্রায় ৫ শতাধিক হোটেল - মোটেল ও রিসোর্ট আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার , শুক্রবার ও শনিবার কক্সবাজারে অন্তত সাড়ে ৩ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটক বেশি আসায় ব্যবসা বানিজ্যে সুফল পাচ্ছেন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় ব্যবসায়ীরা।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন আসছে লাখ লাখ মানুষ। অধিকাংশ হোটেলের কক্ষ বুকিং রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি পর্যটকদের সুবিধায় হোটেলে কক্ষ ভাড়ায় সাধ্যমতো ডিসকাউন্ট দেয়ার।
এদিকে শীত মৌসুমে হঠাৎ করে সাগরে বেড়েছে ঢেউয়ের তীব্রতা। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তায় সজাগ রয়েছে লাইফ গার্ড কর্মীরা।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন, ছুটির দিনে অধিক পর্যটকের আগমনে আমরাও সচেষ্ট হয়ে কাজ করছি। তবে এখন পর্যটকদেরও সচেতনতার সঙ্গে বাচ্চাদের সঙ্গে রেখে চলাচল করতে হবে। পর্যটকদের সেবায় সর্বদাই আমরা সব ইতিবাচক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকব।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এক সাথে অনেক পর্যটক আগমন করায় যানজট বেড়েছে। সমস্যা নিরসনে শহরের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করছে আমাদের টিম।
আজকালের খবর/ এমকে