‘আমরা মনে করি, এত বড় অভ্যুত্থান, এত রক্ত, এত জীবন সামগ্রিক সব কিছুর যে চাওয়া, তা কেবল একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। আমরা অবশ্যই মনে করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের যারা প্রতিনিধি হবেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের কাছে ক্ষমতা যাবে, এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এটা তো এক কথায় অবাস্তব এবং অসম্ভব যে ছয় মাসের মধ্যে নতুন একটি ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করা, বিচারব্যবস্থা সংস্কার করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের মূল ভূমিকায় ফিরিয়ে আনা।’
আজ শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কম্বল বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেমন বলেছিল, ২০২৬ এর মাঝামাঝি কিংবা তার দুই-এক মাস আগে হোক, যেটি যৌক্তিক তাতে আমরা কোনো দ্বিমত করব না। কিন্তু যদি বলা হয় এ বছরের জুন, সেটি অযৌক্তিক।'
তিনি জানান, শিগগির জুলাই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসবে।
সারজিস বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা, যেখানেই আমরা গিয়েছি, সেখানেই যে কথাটি বলেছি তা হলো, এই যে জুলাইয়ের এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এর একটা লিখিত স্বীকৃতি থাকা উচিত। আমাদের যারা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, তাদের স্বীকৃতি থাকা উচিত।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের আলোচনায় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও সম্মত হয়েছেন যে, অবশ্যই একটি ঘোষণাপত্র থাকা উচিত। আমরা বিশ্বাস করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসবে।
সারজিস বলেন, 'সংস্কার হওয়ার পরপরই যদি আমরা নির্বাচনের দিকে যাই তাহলে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে বলে আমরা মনে করি।'
সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, 'দেখুন, অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী সময় থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত কোনো কিছু আমরা নিজেরা ঠিক করিনি। মানুষ যেটা চেয়েছে, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সেটা করেছি। জুলাই অভ্যুত্থানের সব কর্মসূচি ছিল মানুষের পালস বুঝেই। বাংলাদেশে এখন একটা নতুন চাওয়া শুরু হয়েছে যে, এই তরুণরা আগামীতে মানুষের হয়ে, জনগণের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করুক।'
'সেই জায়গায় পঞ্চগড়ের মানুষ যদি মনে করে যে, আমি বা নতুন প্রজন্মের অন্য যে কেউ সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, তাহলে আমি মনে করি এই দ্বায়িত্বটা নেওয়া উচিত,' যোগ করেন তিনি।
এদিন পঞ্চগড় পৌর এলাকার প্রায় দুই হাজার মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া হয়।
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পঞ্চগড় জেলা ও পৌর বিএনপি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আজকালের খবর/ এমকে