প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:১২ PM
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ভুল চিকিৎসায় নাওশিন নামের ১৪ মাসের এক মেয়ে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে ভুয়া চিকিৎসক জাবেদ ইকবাল বাবুকে স্থানীয়রা পুলিশে সোপর্দ করেছে। ভুয়া চিকিৎসক জাবেদ ইকবাল বাবু ফেনী জেলা ছাগল নাইয়া উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাশেমের ছেলে। নিহত শিশু বিশালপুর ইউনিয়নের নাইশিমুল এলাকার নবিন উদ্দিনের মেয়ে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে পৌর শহরের রামচন্দ্রপুরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর বাবা নবিন উদ্দিন জানান, গতকাল বুধবার দুপুরে শিশুর জ্বর আসে। তখন রামচন্দ্রপুরপাড়া ডা. জাবেদ ইকবাল বাবুর চেম্বারে এলে চিকিৎসা দিয়ে আবার আজ আসতে বলে। চিকিৎসা নিয়ে মেয়ে অনেকটা সুস্থ হলে আজ আবার ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসি। ডাক্তার দেখে শ্বাসকষ্ট আছে এ কথা বলে একটি ইনজেকশন দেয়। এরপর শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ডাক্তার জাবেদ ইকবাল বাবু তখন হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ের সামান্য জ্বর নিয়ে আসলাম। ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ে নাওশিনের মৃত্যু হয়েছে। তার চেম্বারেই মারা গেছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসক জাবেদ ইকবাল বাবু ইনজেকশন দেওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি জানান, শিশুকে সুস্থই দেখা গেল। আমার এখানে চিকিৎসা নিয়েছে। ২-৩ মিনিটের মধ্যেই খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল শিশুর তখন হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে শিশুর খিঁচুনি ছিল। হয়তো রাস্তার মধ্যে মারা গেছে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের নামের সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জনসাধারণের নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএমডিসিকে এই নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু জাবেদ ইকবাল বাবুর রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান সে কলকাতায় ডাক্তারি পড়া লেখা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা ডা. সাজিদ হাসান লিংকন জানান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) রেজিস্টার্ড না হলে আইন অনুযায়ী ভুয়া ডাক্তার। তবে জাবেদ ইকবাল বাবু একটি শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছেন সেই মৃত্যুর খবর শুনেছি। আসলে তিনি ভুয়া? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, খোঁজখবর নিয়ে বলা যাবে। ভূয়া হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শেরপুর অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে চিকিৎসকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
আজকালের খবর/ওআর