প্রকাশ: বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:১৩ PM
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ৪৩ বছরের পরিত্যক্ত ভবনের একাংশে চলছে উপজেলা ডাকঘরের কার্যক্রম। পরিত্যক্ত ওই ঘরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক বিভাগের কর্মীরা। একটি কক্ষে কোনো রকমে অফিস কার্য পরিচালনা করা হলেও শৌচাগারসহ অফিস এবং কোয়ার্টারের প্রায় সব কক্ষ পরিত্যক্ত। ভবনটির বাইরে শেওলা এবং ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় পলেস্তার ধসে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে ডাকঘরতো নয় যেন ভূতুরে বাড়ি।
জানা গেছে, ১৯৮১ সালের ৪ নভেম্বর তৎকালীন ডাক, তার ও টেলিফোন মন্ত্রী এ কে এম মাইদুল ইসলাম চিলমারী সাব-পোস্ট অফিস হিসাবে ওই ভবনটির উদ্বোধন করেন। উপজেলার কলেজ মোড় এলাকায় ২১ শতাংশ জমির উপরে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একতলা এই ভবনটি নির্মিত হয়। এর পর দীর্ঘ প্রায় ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ভবনটির কোনো সংস্কার করা হয়নি। একে একে ভবনের সকল কক্ষ অকেজো হয়ে পড়ছে। সামনের একটি কক্ষে কোনো রকমে পোস্ট ই-সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একটি কক্ষে পোস্ট অফিসের দাপ্তরিক কাজ চললেও বাকি সব কক্ষ অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ভবনের বাইরে সর্বত্র শেওলা জমেছে আর ভিতরের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তার ধসে গেছে। অবস্থা দৃষ্টে সেটি পরিত্যক্ত এক ভূতুরে বাড়ি।
সরেজমিনে ডাক ঘর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে কোন রকমে জীবনের ঝুকি নিয়ে ডাক আদান-প্রদান এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পার্শে¦র দুইটি কক্ষে চলছে পোস্ট ই-সেন্টারের কার্যক্রম। আফিসে থাকা একমাত্র শৌচাগারটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ায় দরজা ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। পোস্ট মাস্টারের জন্য আবাসিক অংশটিও সম্পূর্ণরূপে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। নিরাত্তার অভাবে অফিস শেষে স্ট্যাম্প ও নগদ অর্থসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থানায় জমা রাখছে এবং সকালে অফিস খুলেই থানা থেকে সব মালামাল নিয়ে আসতে হয়। জরাজীর্ণ অফিসটিতে পোস্ট মাস্টার ১ জন, অপারেটর ১ জন, পোস্টম্যান ১ জন, প্যাকার ১ জন, রানার ১ জন ও ইবি নৈশপ্রহরী ১ জন মিলে মোট ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
এ সময় এলাকাবাসী মিজানুর রহমান, সবুজ, আলমগীর, আরাফাতসহ অনেকে বলেন, উপজেলায় এত কিছুর উন্নয়ন হয়, পোস্ট অফিসটির কোনো উন্নয়ন হয় না? জরাজীর্ণ এই পোস্ট অফিসটিতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় রকমের দুর্ঘটনা বলে জানান তারা।
উপজেলা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মো. সফিকুল ইসলাম জানান, অফিসটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, আমরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অফিসে কাজ করছি। অফিসটি সংস্কারের জন্য উপরে বলেছি কিন্তু বরাদ্দ না আসায় তা হয়নি।
আজকালের খবর/ওআর