বিদায়ী বছরে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর ৫৭৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। বছরের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। তাদের মধ্যে ছাড়া পেয়েছে ১ লাখ ৪০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সবশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, গত বছরের জানুয়ারিতে ১৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৫ জন, মার্চে ৬ জন, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ১২ জন, জুনে ৮ জন, জুলাইয়ে ১৪ জন, আগস্টে ৩০ জন, সেপ্টেম্বরে ৮৭ জন, অক্টোবরে ১৩৫ জন, নভেম্বরে ১৭৩ জন এবং ডিসেম্বরে ৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি-২৩৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার হাসপাতালগুলোতে। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ১০৪ জনের।
ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল অক্টোবর মাসে। এ সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ৮৭৯ জন। এরপরে যথাক্রমে নভেম্বরে ২৯ হাজার ৬৫২ জন, সেপ্টেম্বরে ১৮ হাজার ৯৭ জন, ডিসেম্বরে ৯ হাজার ৭৪৫ জন, আগস্টে ৬ হাজার ৫২১ জন, জুলাইয়ে ২ হাজার ৬৬৯ জন এবং জানুয়ারিতে ১ হাজার ৫৫ জন। সবচেয়ে কম রোগী ভর্তি হয়েছে মার্চে-৩১১ জন।
এ পরিস্থিতিতে আইইডিসিআরের জরিপে উঠে এলো শঙ্কা জাগানিয়া তথ্য। নভেম্বরে চালানো এ জরিপে দেখা যায়, রাজধানীর ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৬টিতে এডিসবাহী মশার ঘনত্ব বা ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এর মানে দাঁড়ায়, ঢাকার বেশিরভাগ এলাকাতেই এডিস মশার উপস্থিতি চরম ঝুঁকিপূর্ণ স্তরে। এমনকি কোনো কোনো এলাকায় এডিসের ঘনত্বের মাত্রা ৭০।
কিন্তু মৌসুমের শেষে এসেও কেনো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ডেঙ্গুর বিস্তার? আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে কিছু কিটনাশক ছিটানো ছাড়া তো সংঘবদ্ধভাবে কোন কাজ নেই। কীটততত্ত্ববিদ দিয়ে দল গঠন করে এডিস মশার প্রজননস্থল খোঁজা হচ্ছে না, মশার লার্ভা ধ্বংস করা হচ্ছে না। ফলে ডেঙ্গুও নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এম এইচ চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমার কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। মশা মারা হচ্ছে না, ডেঙ্গুর ভাইরাস নিয়ে গবেষণা হচ্ছে না এবঙ মশা মারার জন্য পরিকল্পনাও নেই। অবশ্য এ পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনও অনেকাংশে দায়ী। তার আশঙ্কা, কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় ডিসেম্বরেও ভোগাতে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
আজকালের খবর/ এমকে